বিশেষ প্রতিনিধ
দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মতপার্থক্য স্পষ্ট হতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ফিলিস্তিনে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ। সমাবেশে মঞ্চের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।সমাবেশ শেষ ফিলিস্তিনের গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান গণহত্যা এবং ফিলিস্তিনিদের কষ্ট প্রকাশের ভাষা নেই। এই হত্যাযজ্ঞ এতটাই বর্বর, যা পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোথাও হয়নি। আমরা এই বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হয়েছি। আমরা স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সংহতি জানাচ্ছি।
মান্নার বক্তব্যে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিও উঠে আসে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের মতপার্থক্য স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। সংকট সমাধানে আমাদের শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রের কাছেই ফিরে যেতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি যা দেখছি, গত ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশের আকাশে নতুন করে মেঘের আবির্ভাব হয়েছে। যেরকম করে দেশের বড় রাজনৈতিক দলের সাথে সরকারের মতপার্থক্য প্রকাশিত হয়েছে। এটা আমাদের সবার জন্য দুশ্চিন্তার। আমরা চাই, বাংলাদেশের যতো বড় কঠিন কাজই হোক, সেই কাজ নিজেদের মধ্যে কথা বলে, আলোচনা করে সমাধানের দিকে যেতে। আমরা চাই বাংলাদেশের কোটি কোটি জনতা একসাথে থাকুক। আমরা যাতে আমাদের লড়াই অব্যাহত রাখতে পারি। মেহনতী জনতার পক্ষে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবো।
ফিলিস্তিনে গণহত্যা বিষয়ে তিনি বলেন, এইবারের গাজার ঘটনা প্রমান করেছে এতো বড় অমানবিকতা সম্ভবত পৃথিবীর ইতিহাসে আর কখনো ঘটেনি। আমি বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই দেশের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই দল মত ধর্ম নির্বিশেষে একত্রিত হয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ইসরায়েল নির্মমভাবে শিশুদের নিহত করেছে। হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। সমাজের এমন কোন অংশ নেই যেখানে তারা হত্যা করেনি। হাসপাতাল, শরনার্থী শিবির আক্রান্ত হয়েছে। সারা পৃথিবীর মানুষ ইসরায়েল এবং নেতানিয়াহু চক্রকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গণহত্যার অভিযোগে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করে আন্তর্জাতিক আদালতে সোপর্দ করার ব্যবস্থা করা হয় নাই। আমরা আজকের সমাবেশ থেকে বলতে চাই সন্ত্রাসী ইসরায়েলের সামরিক চক্র, গণহত্যায় অভিযুক্ত নেতানিয়াহু চক্রসহ যারা প্রত্যক্ষভাবে এই গণহত্যার সাথে যুক্ত তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আন্তর্জাতিক আদালতে তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নেতানিয়াহুসহ জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও অভিযুক্ত করছি এই গণহত্যার প্রত্যক্ষ মদদদানকারী হিসেবে। তাদের ভন্ডামির সারা পৃথিবীর মানুষ জেনে গেছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।