ওসমানীনগর(সিলেট)প্রতিনিধি
সিলেটের ওসমানীনগরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া এক আওয়ামী লীগ নেতাকে হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেয়ার ১০দিন অতিবাহিত হলেও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এই ঘটনায় উপজেলা জুড়ে নানা আলোচনা-সামলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে ছিনিয়ে নেয়া আওয়ামী লীগ নেতা ও ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আকছার আহমদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পূর্ব বিরোধ চলে আসছিল একই গ্রামের আব্দুল আজিম ও আজমল খাঁনসহ কয়েক জনের সাথে। এনিয়ে তাদের মধ্যে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। গত ৩১ মার্চ বিকালে উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের ইসলামপুর হাওরের পাশে কাজ করছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকছার আহমদ। এসময় একই গ্রামের আব্দুল আজিম, হোসাইন আহমদ হাসান, হাবিবুর রহমান, আব্দুল হালিম, আবুল হোসেন, আজমল খানের সাথে আকছার আহমদের পূর্ব বিরোধের জের ধরে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আছকার আহমদকে আটক করে তারা থানা পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে আসলে আছকার আহমদকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তারা। পুলিশ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে আকছার আহমদকে গ্রেফতার করে হাতকড়া পড়িয়ে দেয়। এসময় আকছার আহমদের আত্মীয় স্বজন, স্থানীয় জনতা এবং পুলিশের তৃমুখী বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশের হেফাজতে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেয় তার স্বজনও উপস্থিত জনতা। পুলিশের উপস্থিতিতেই দুই পক্ষের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। আহত হন পুলিশসহ ৭ জন। পরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় হাতকড়া পাওয়া গেলেও ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হলে সেই আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেত পারেনি পুলিশ। হামলা চালিয়ে পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও গ্রেফতারকৃতকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে থানায় ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়। তবে অভিযুক্ত কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
আকছার আহমদের ভাই জয়নুল আবেদিন জেনেল বলেন, আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার। আওয়ামী লীগের এক নেতার ছত্রছায়ায় ২০১৮ সাল আমাদের উপর হামলা চালায় আব্দুল আজিমের লোকজন। তারা রাজনৈতিক মামলায় আমাদের গ্রেফতার করাতে প্রতিনিয়িত পুলিশ নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসে। সম্প্রতি তারা আমার ভাই আছকার আহমদকে আটক করে। তাদের হামলায় আমাদের দুইজন আহত হন।
অপর পক্ষের মামলার বাদি আব্দুল আজিম বলেন, জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ঘটনার দিন আমাদের পক্ষের আজমল ও আবুলের উপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ নেতা আকছার আহমদ। খবর পেয়ে আমরা কয়েকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে থানা পুলিশকে খবর দেই। তখন আকছার মিয়া আমাদের দেখে দৌড় দিলে তাকে আটক করা হয়। এসময় তাদের হামলায় আমাদের ৪জন আহত হন।
এবিষয়ে ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) মো. মোনায়েম মিয়া বলেন, ছিনিয়ে নেয়া আওয়ামী লীগ নেতা ও ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।