যাযাদিপ্র রিপোর্ট
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সূত্রাপুর থানা কমিটির উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ ২০২৫) সকাল ৮টায় লোহারপুলে পার্টির পতাকা উত্তোলন ও লাল পতাকা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিপিবির সূত্রাপুর থানা কমিটির সভাপতি বিকাশ সাহার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বী খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কৃষক নেতা জাহিদ হোসেন খান, যুবনেতা আনোয়ার হোসেন, ৪৫-৪৬ নাম্বার ওয়ার্ড শাখার সম্পাদক হামিদুর রহমান ইকবাল, শ্রমিক নেতা পরেশ চন্দ্র মজুমদার, সাবেক ছাত্রনেতা দীপক শীল প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে বিকাশ সাহা বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা। জনগণের পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। তিনি বলেন, দেশ ও দেশের মানুষের মুক্তি নিশ্চিত করতে বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। সিপিবি সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের সংগ্রামে অবিচল থেকে লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
বক্তব্যে বিকাশ সাহা আরো বলেন, গত ১০০ বছর ধরে এই উপমহাদেশে কমিউনিস্টরা ভয়-ভীতি, জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। বামপন্থীরা জনগণের প্রকৃত মিত্র।
জাহিদ হোসেন খান বলেন, সিপিবির ইতিহাস লড়াই সংগ্রাম আর ত্যাগের ইতিহাস। যতদিন শোষণ-বৈষম্য সমাজ থেকে বিতাড়িত না হবে ততদিন কমিউনিস্টদের সংগ্রাম চলবে। তিনি বলেন, পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক-সামন্তবাদী শাসক গোষ্ঠী কমিউনিস্ট কর্মীদের ওপর হত্যা, নির্যাতন, জেল-জুলুম-হুলিয়ার খড়্গ চালায়। হাজার হাজার কমিউনিস্টকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। তা সত্তে¡ও তেভাগা, নানকার, টংকসহ কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি দেশ গঠনে কাজ করেছে কমিউনিস্ট পার্টি।
গোলাম রাব্বী খান বলেন, যতদিন শোষণ থাকবে ততদিন কমিউনিস্ট পার্টি লড়াই অব্যাহত রাখবে। সমাজের শোষণ ও বৈষম্য নির্মূল করার কাজ করছে সিপিবি। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ। লাখো শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না, বৃথা যেতে দেবো না।
অন্য বক্তারা বলেন, দেশ ফ্যাসিবাদী হাসিনা মুক্ত হলেও শোষণ ও বৈষম্য মুক্ত হয়নি। সামাজিক নিরাপত্তা, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা, কাজের নিরাপত্তা এখনো অধরা। অন্তর্র্বর্তী সরকারের আমলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে, কিন্তু নতুন শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি, দ্রব্যমূল্য লাগামছাড়া। একাত্তরের পরাজিত সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়েছে। এভাবে চলতে দেয়া যায় না। তাই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এদিনে শপথ নিয়ে নতুন গতিতে দেশ গড়ার কাজে বামপন্থীদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। মুক্ত মানুষের মুক্ত সমাজ গড়তে হবে।
কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল গাওয়ার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।