যাযাদিপ্র ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ঐতিহ্যবাহী সাদাদল পুনর্গঠিত হয়েছে। এতে কিছু বর্ণচোরা, স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির সমন্বয়ে দীর্ঘদিনের গড়ে উঠা একটি চক্রের হাত থেকে মুক্ত হয়ে সাদাদল তার স্বমহিমায় আবির্ভূত হবার সুযোগ পেয়েছে প্রকৃত শিক্ষকদের নেতৃত্বে। ফলে সাদাদলের বিতর্কিত সিন্ডিকেটটি যারা দীর্ঘদিন ধরে দলের নেতৃত্ব কুক্ষিগত করে রেখেছেন, তারা হয়ে পড়েছে অপাংক্তেয় ও অবাঞ্চিত। কোটারীভুক্ত এই চক্রটি তাদের সাম্প্রতিক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের কাছে নিজেদের নেতিবাচক ভাবমূর্তি আরও একবার স্পষ্ট করলো। ইতিবাচক একাডেমিক এবং সামাজিক পটভূমি ও অবস্থানের কারণে পুনর্গঠিত সাদাদলে সাধারণ শিক্ষকসহ জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষকগণ যোগদান করতে থাকে পুনর্গঠিত হবার পর থেকে। এতে তথাকথিত সাদাদলের নেতৃবৃন্দ নিজেদের অবস্থান বুঝতে পেরে স্বভাবগত চরিত্র অনুযায়ী নিজ সহকর্মীর মর্যাদাহানি ও কুৎসা রটনায় লিপ্ত হয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, এই প্রচারের জন্য তারা বিএনপি’র মিডিয়া সেলকে পর্যন্ত অপব্যবহার করেছে।
অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম এবং অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকারসহ আরও কতিপয় শিক্ষক যারা বর্তমানে অবসরে ও দীর্ঘমেয়াদী ছুটিতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিয়োজিত আছেন তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদাদলের নাম ব্যবহার করে ‘৩ জন শিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার সিদ্ধান্ত ঢাবি সাদা দলের’-শীর্ষক প্রেস বিজ্ঞপ্তির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতির নামে ব্যক্তিস্বার্থে সংগঠনকে ব্যবহার করাসহ নানাবিধ বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িত থেকে এই গুটি কয়েক শিক্ষক ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসের রাজনীতিতে নিজেদের নেতৃত্বকে অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন। এছাড়াও, ছুটিতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত এসব শিক্ষকবৃন্দের সাথে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তাদের উপর অর্পিত রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব অবহেলা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে এ ধরণের ঘৃণ্য ও ন্যক্কারজনক কর্মকান্ডে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন যা সুস্পষ্ট তদন্তের দাবী রাখে। এদের অনেকেই আবার বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন তো দূরের কথা উল্টো তাদের সাথে একই প্যানেলে সাদা দলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন করেছেন এবং কমিটিতে এখনো কাজ করছেন। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, সাদাদল কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রার্ডকৃত সংগঠন কিংবা কোনো প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের হাতে শিকলবন্দী দল নয়। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সাদাদলের সাথে প্রকাশ্যে ‘সম্পর্ক না রাখা’, ‘সাদা দলের পরিচয় দিতে পারবে না’, ‘কেউ যুক্ত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ’-এমন বক্তব্য প্রদান এবং হুমকি ফ্যাসিষ্ট মনোভাব ও প্রতিক্রিয়াশীল চরিত্রের বহি:প্রকাশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নামধারী এই প্রতিক্রিয়াশী চক্রের তিনজন সম্মানিত শিক্ষকের নাম-ছবিসহ যে বিবৃতি ছেপেছেন তা ইতিহাসে নজিরবিহীন ও ঘৃণিত হয়ে থাকবে।
এই প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের তিনজন সম্মানিত শিক্ষকের সামাজিক মর্যাদা নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, এমনকি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র মিডিয়া সেলকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে বিন্দুমাত্র কুন্ঠাবোধ করেনি। কে কার সাথে সম্পর্ক রাখবে-কি রাখবে না, সাধারণ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়াশীল এই চক্রের এ ধরণের হুমকি প্রচারের পূর্বে গণমাধ্যমের যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল এবং আমরা মনে করি, সংশ্লি ষ্ট প্রচার মাধ্যম সেচ্ছায় এইগুলো প্রত্যাহার করে নিবেন। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয়তাবাদী শক্তির উপর প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের আক্রমণ তীব্র হতে তীব্রতর হচ্ছে। বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের এই আক্রমণ এবং হুমকি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সার্বভৌমত্বের উপর চরম আঘাত বলে আমরা বিশ্বাস করি। এই প্রতিক্রিয়াশীল তথাকথিত সাদাদলের নামধারী ব্যক্তিদের থেকে সতর্ক থাকতে আমরা সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই।