Jaijaidin

সচেতনতার অভাবে বাড়ছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ

Shah Alam Soulav
11 Min Read

গাফফার খান চৌধুরী

সচেতনতার অভাবে বাড়ছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা। সেই অনুপাতে বাড়ছে হতাহত ও পঙ্গুত্বের সংখ্যা। প্রতিদিন গড়ে অন্তত দুইটি করে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশী। বিস্ফোরণের সংখ্যা, হতাহত ও পঙ্গুত্বের সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই বিস্ফোরক পরিদপ্তরের কাছে।

যদিও বিস্ফোরক পরিদপ্তর বলছে, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের প্রকৃত সংখ্যা, হতাহত ও দগ্ধদের তথ্য সংরক্ষণ করতে বিশেষ ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলছে। ডাটাবেজ তৈরিতে সহায়তা করতে অনুরোধ করা হয়েছে দেশের সকল সরকারী বেসরকারী হাসপাতাল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং তদন্তকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে।

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার দিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিশুসহ একই পরিবারের তিন জন দগ্ধ হয়। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বন্ধ ঘরে গ্যাসের চুলা অন করে আগুন জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে বলে দগ্ধরা জানান।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার শবে বরাতের রাতে আশুলিয়ার ইয়ারপুরের গুমাইল এলাকার আমজাদ ব্যাপারীর দোতলা বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ১১ জন দগ্ধ হন। ওই ঘটনায় ২৩ ফ্ব্রেুয়ারি পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা একই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনাটিও একইভাবে ঘটেছে বলে আহতদের বরাত দিয়ে বলছেন চিকিৎসকরা।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলনা বেলুন ফোলানো গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুই শিশু ও বেলুন বিক্রেতাসহ ৩ জন মারা যায়। দগ্ধ ১৩ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বরগুনার পাথরঘাটায় মোল্লা আইস ফ্যাক্টরীতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শাহজাহান হোসেন সম্রাট (৫০) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। দগ্ধ হন ৫ জন। এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি মাদারিপুরের শিবচরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের তিন জন দগ্ধ হয়।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর গড়ে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৬০ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের সংখ্যা তুলনামুলকভাবে বেশী। বিস্ফোরণে নিহতদের ৮৫ শতাংশই নারী ও শিশু। অধিকাংশ বিস্ফোরণের ঘটনাই ঘটেছে রান্না ঘরের গ্যাস সিলিন্ডার বা গ্যাসের চ’লা থেকে। আর বিস্ফোরণে দগ্ধ হন বছরে গড়ে অন্তত ৫শ’ জন। যাদের মধ্যে কমপক্ষে ২শ’ জন চিরতরে পঙ্গুত্ববরণ করেন। পরে তারা নানা জটিল রোগে ভ’গে মারা যান। পঙ্গুত্ববরণকারীরা পরিবারের কাছে রীতিমত বোঝা হন। তাদের দেখভাল করতে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ হয়ে যায় পরিবারগুলোর। অনেক সময় চিকিৎসা করতে গিয়ে অনেক পরিবারই নিঃস্ব হয়ে পড়ে। মারাত্মকভাবে দগ্ধদের মধ্যে বেঁেচ থাকার হার শতকরা ১০ থেকে ১২ জন।

সূত্রটি বলছে, শুধু যে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে তা নয়, পাল্লা দিয়ে ঘটছে ব্রয়লার, এসি বা ফ্রিজের কম্প্রেসার ও বেলুন ফুলানোর কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা। এতেও অনেক মানষের মৃত্যু হচ্ছে। পঙ্গুত্বও বরণ করছেন অনেকেই।

বিস্ফোরক পরিদপ্তরের ভাষ্য মতে, দূর্ঘটনা কমিয়ে আনতে নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে ৩০টি গ্যাস সিলিন্ডার কোম্পানীকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সামনে রোজা ও ঈদ আছে। স্বাভাবিক কারণেই ইফতারি ও সেহরীর রান্না দ্রুত করতে অধিকাংশ মানুষই গ্যাস ব্যবহার করেন। যাদের বাসায় লাইনের গ্যাস আছে তাদের তেমন কোন সমস্যা নেই। তবে ব্যবহারের আগে চ’লা ও লাইনে কোন ত্রুটি আছে কিনা তা নিজ উদ্যোগ চেক করতে বলা হয়েছে।
সূত্রটি বলছে, দ্রুততার সঙ্গে রান্না শেষ করতে গ্রামে ও শহরে এ সময়ে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহার অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় দ্বিগুন হয়ে তাকে। এজন্য গ্যাস সিলিন্ডার কোম্পানীগুলোকে সিলিন্ডার বিক্রির সময় অবশ্যই রেগুলেটর ও সিলিন্ডারের ক্যাপ ভাল ভাবে পরীক্ষা করে বিক্রি করতে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিক্রির সময় অবশ্যই সিলিন্ডারের মাথায় গ্যাস লাইট জ্বালিয়ে পরীক্ষা করে নিতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিক্রেতা ও ক্রেতাকে সচেতন থাকতে হবে।

বিস্ফোরক পরিদপ্তরের আইন মোতাবেক, গ্যাস সিলিন্ডার কোন এলপিজি পাম্প থেকে ভর্তি করা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। তারপরেও অনেকেই রাতের অন্ধকারে গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস ভরেন। এ ধরণের পাম্পগুলোকে শনাক্ত করার কাজ চলছে। অনেক সময় সিলিন্ডারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তা ধ্বংস না করার কারণে গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার ও বাসা বাড়ির রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এ ব্যাপারে অবশ্যই ব্যবহারকারীদের সর্তক থাকতে হবে। নির্দেশনা অমান্য করে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করলে ওইসব কোম্পানীর লাইসেন্স বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বেআইনীভাবে এলপিজি গ্যাস বিক্রি করলে ওই পাম্প সিলগালা করে দেওয়ার সুষ্পষ্ট নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহত ও পঙ্গুত্বের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকৃতপক্ষে সারা দেশে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের সঠিক কোন পরিসংখ্যান বা ডাটাবেজ নেই তাদের কাছে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে নতুন করে বিস্ফোরণের ডাটাবেজ তৈরি করতে দেশের সকল সরকারী বেসরকারী হাসপাতাল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তা চেয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে। যাতে করে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরি করা সম্ভব হয়। যা ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির কাজে আসবে। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে গ্রাহক ও বিক্রেতা পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ অব্যাহত আছে।
বিস্ফোরক পরিদপ্তর বলছে, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের অনেক ঘটনারই তদন্ত করে দেখা হয়। তদন্তে দেখা গেছে, অধিকাংশ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে পাইপের লিকেজ থেকে। রেগুলেটরের বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নিম্নমানের রেগুলেটর বা সিলিন্ডারের সেফটি ক্যাপের কারণে বিস্ফোরণ ঘটে কিনা সে বিষয়টিও তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে। কোন গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটর খারাপ থাকলে এবং তা তদন্তে প্রমাণিত হলে অবশ্যই ওই কোম্পানীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

পরিদপ্তর বলছে, প্রত্যেক গ্যাস সিলিন্ডারের গায়ে ব্যবহার বিধি বা নিয়ম কানুন খোদাই করে লেখা থাকে। সেটি অবশ্যই গ্রাহকদের জানা উচিত। কোন গ্রাহক যদি পড়তে না পারেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই বিক্রেতাকে গ্যাস সিলিন্ডার ক্রেতাকে শিখিয়ে দিতে হবে। এ ব্যাপারে কোম্পানীগুলোকে তাদের ডিলারদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে বলা হয়েছে। যাতে করে বিক্রেতা গ্রাহককে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম বলে দিতে পারেন।

পরিদপ্তরের তথ্য মতে, বছরে গড়ে ৫ থেকে ৬ টি বড় ধরণের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে ছোটখাটো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে হরহামেশাই। গ্যাস সিলিন্ডার যথাযথভাবে পরিবহন, মজুত ও ব্যবহার না করা এবং ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস ভালভের কারণেও গ্যাস বেরিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এজন্য অবশ্যই গ্যাস সিলিন্ডার, রেগুলেটর, কোম্পানীর সিল, সেফটি ক্যাপ, পাইপ ও রাবারের রিং অনুমোদিত বিক্রেতাদের কাছ থেকে কিনতে হবে। সিলিন্ডারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তা পরীক্ষা করতে হবে। সিলিন্ডারের মেয়াদ সাধারণত ১০ বছর থেকে ১৫ বছর থাকে। সিলিন্ডার সমতল জায়গায় রাখতে হবে।

পরিদপ্তরের নির্দেশিকা মতে, চুলা সিলিন্ডার থেকে কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি উপরে রাখতে হয়। সিলিন্ডারটি লম্বা পাইপের সাহায্যে চুলা থেকে অন্তত তিন ফুট দূরে রাখার নিয়ম। সিলিন্ডার চুলার নিচে বা ক্যাবিনেটের ভেতরে কিংবা আবদ্ধ জায়গায় রাখা যাবে না। রাখতে হবে খোলামেলা জায়গায়। যাতে করে চার দিকে আলো বাতাস যাতায়াত করতে পারে। বিদ্যুৎ, দাহ্য পদার্থ, প্রজ্বলিত বা বিস্ফোরক ও বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ ও অন্য কোন গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আরেকটি সিলিন্ডার অবশ্যই কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ ফুট দূরত্বে রাখতে হবে।

বিস্ফোরক পরিদপ্তরের নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, সিলিন্ডারের আশপাশে আগুন জ্বালানো বা ধূমপান বা মশা তাড়ানোর কয়েল জ্বালানো যাবে না। সিলিন্ডারের ওপরে সব ধরণের জিনিসপত্র রাখা নিষিদ্ধ। রান্না শুরুর কমপক্ষে আধা ঘণ্টা আগে কিচেনের বা রান্না ঘরের দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে। রান্না শেষে চুলার নব বা সুইচ ও সিলিন্ডারের রেগুলেটর সুইচ বন্ধ করতে হবে। আবদ্ধ ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার থাকলে সেই কক্ষের সব দরজা জানালা খুলে দিয়ে ফ্যান চালিয়ে দিতে হবে। ঘরের ভেতরে গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

পরিদপ্তরের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, আচমকা ঘরে ঢুকেই আগুন জ্বালানো যাবে না। ইলেকট্রিক সুইচ, সিলিন্ডারের রেগুলেটর কিংবা মোবাইল ফোন অন বা অফ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সিলিন্ডারের লিকেজ খোঁজার জন্য টর্চ লাইট ব্যবহার করতে হবে। কোনভাবেই মোমবাতি কিংবা ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে লিকেজ খোঁজা যাবে না। সিলিন্ডার নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে, যাতে করে চ’লার তাপে সিলিন্ডার গরম না হয়। গ্যাস সিলিন্ডার বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেলে বহন করা যাবে না। ঘরে গ্যাস ডিটেক্টর ও অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র রাখা প্রয়োজন।

সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরক পরিদপ্তর সিএনজি পাম্পে বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে থাকে। তদন্তের জন্য ঘটনাস্থল পর্যন্ত পরিদর্শন করে। আলামত সংগ্রহ করে তার পরীক্ষা নিরীক্ষা পর্যন্ত করে থাকে। যদিও এসব মামলায় কাউকে জেল হাজতে পাঠানোর তেমন কোন নজির নেই। কোন কোন পাম্পকে গাফিলতির অভিযোগে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা হিসেবে গুনতে হয়েছে।

সূত্র বলছে, বাসা বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের অধিকাংশ ঘটনায়ই মামলা হয় না। মামলা হলেও অপমৃত্যুর মামলা হয়। এসব মামলার তেমন কোন তদন্ত হয় না। কোন পক্ষের গাফিলতিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহত হয়েছে, তা নির্ণয় হয় না। অধিকাংশ মামলার তদন্ত রিপোর্টে যান্ত্রিক ত্রুটি, গ্যাস লাইনের পাইপের লিকেজসহ নানা কারণে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়। বিস্ফোরিত হয়ে সিলিন্ডার চ’র্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে তার মেয়াদ ছিল কিনা আর শনাক্ত করার সুযোগ থাকে না। এতে করে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান পার পেয়ে যায়। এমনকি ব্যক্তিগত গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায়ও মামলা হওয়ার রেকর্ড খুবই কম। তবে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের ছাড়া অন্য কারো হতাহত বা ক্ষতি হলে মামলা হওয়ার নজির আছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক ( অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, মূলত সচেতনতার অভাবেই অধিকাংশ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নিয়মানুযায়ী বিক্রেতাদের গ্যাসের পাইপ, সেফটি লক, রেগুলেটরে কোন ত্রুটি আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার নিয়ম। কিন্তু অনেক সময়ই তা যথাযথভাবে পালিত হয় না। একই সঙ্গে ক্রেতাকেও সর্তক থাকতে হয়। এ ছাড়া কোম্পানীগুলোর উচিত সিলিন্ডার চেক করা।

তিনি বলছেণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিয়মগুলো যথাযথভাবে পালিত না হওয়ার কারণে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহত ও পঙ্গুত্ববরণের মত ঘটনা ঘটে। মূলত সচেনতার অভাবেই প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এছাড়া কোন কোন কোম্পানীর নিম্নমানের সিলিন্ডার ও সঠিক সময়ে সিলিন্ডার পরীক্ষা নিরীক্ষা না করেই গ্যাস ভরে বাজারে বিক্রি করার করার কারণেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এসব বিষয় মনিটরিং করা হচ্ছে। নিয়ম মেনে চললে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের হার অনেকাংশে কমে আসবে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *