সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ কনকনে শীত একটু বেশিই ছিল। তাতে কী আজ তো বই উৎসব। উৎসব এবং নতুন বইয়ের অদৃশ্য মায়াজালে বুধবার (১ জানুয়ারি) সকাল সকালই স্কুল হাজির হয়েছিল বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। বই উৎসব অনুষ্ঠান শেষে বই তুলে দেওয়া হয় প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে।
রঙিন ফিতায় আটকে থাকা নতুন বইয়ের গন্ধ মুহূর্তেই সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। নজরকারা মলাটের মধ্যে যেন আবারও বন্দি হয় নতুন বছরের স্বপ্নও।
কাঙ্খিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের অদম্য ইচ্ছেগুলো উচ্ছ্বাসিত করে তোলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। হাসি-আনন্দে একাকার হয়ে বুকের সঙ্গে দুই হাত দিয়ে মায়ার বাঁধনে নতুন বইগুলো বুকে জড়িয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
সোনারগাঁয়ে ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন বই বিতরণ করা হয়েছে।
বই বিতরণ উৎসবকে ঘিরে বেলা ১১টায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ‘বই উৎসব’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, নতুন বছরে নতুন বই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উজ্জীবিত করে। বরাবরের মতো আমাদের শিক্ষার্থীরা উপজেলা ও জেলা এবং জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ মেধা ও শ্রম দিতে প্রস্তুত।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে ৫৪৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী ৬৪ শতাংশ বই এসেছে। জেলায় নতুন বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৫ টি বই। এই পর্যন্ত জেলায় প্রাপ্ত বাইয়ের সংথ্যা ৬ লাখ ৩৯ হাজার ৪১২ টি। তবে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে চাহিদানুযায়ী শতভাগ বই এসেছে, যার সংখ্যা ৫১ হাজার ৯৮৮ টি । অপরদিকে, জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ে ২৬৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে আংশিক বই বিতরণ করা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম জানান, চাহিদা অনুযায়ী প্রায় সত্তরভাগ বই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় পৌঁছেছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর বই প্রায় শতভাগ চলে এসেছে। তবে সোনারগাঁ ও বন্দরে কিছু সংখ্যক বাকি আছে। চতূর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বই সদর উপজেলায় প্রায় পঞ্চাশ ভাগ বই দেওয়া হয়েছে। বাকি চারটি উপজেলায় চতূর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বই আসা বাকি রয়েছে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাত দিয়ে বলেন, নতুন বছরে মাধ্যমিকের কারিকুলামে পরিবর্তন এসেছে। তাই নতুন বই ছাপানো হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের হাতে সকল বই আসতে সময় লাগবে। আশা করছি খুব দ্রুত আমরা সকলের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারবো।