Jaijaidin

অপারেশন ডেভিল হান্ট প্রসঙ্গে বিএনপি দোষী যেন ধরা পড়ে, নিরপরাধ নয়

Shah Alam Soulav
4 Min Read

বিশেষ প্রতিনিধি

দেশে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টের সঠিক প্রয়োগ চায় বিএনপি। তাদের মতে, অবশ্যই যেন দোষীদের আটক করা হয়। কোনোভাবেই যেন নির্দোষ-নিরপরাধ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়। এরকম কিছু হলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলবে।

বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসর, দুষ্কৃতকারী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

সূত্র জানায়, দেশ থেকে ফ্যাসিবাদী সরকার বিদায় নিয়েছে। কিন্তু তাদের দোসররা দেশে-বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। ফ্যাসিবাদী ও তাদের দোসররা দেশের জনগণের সম্পদ অন্যায়ভাবে লুটপাট করেছেন। যারাই তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন, তাদের দেশদ্রোহী আখ্যা দেয়া হয়েছে। দলীয় বাহিনী, অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যায়ভাবে মামলা-হামলা দিয়ে হেনস্তা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সারা দেশে চলছে অপারেশন ডেভিল হান্ট। প্রতিদিনই হচ্ছে গ্রেপ্তার, নেয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থা।

অপারেশন ডেভিল হান্ট প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান যায়যায়দিন প্রতিদিনকে বলেন, সরকার কয়েকদিন আগে ডেভিল হান্ট শুরু করেছে। পুলিশের ভাষ্যমতে, কয়েক হাজার গ্রেপ্তার হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমের সততা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করলে আমি তার প্রতিবাদ করব। কিন্তু আমি জনগণের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাতে চাই, জানতে চাই, এই ডেভিল হান্ট কেন সময়মতো করা হলো না? আমি সত্য কথা বলতে চাই, সচিবালয়ে আগুন হতো না, গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর আক্রমণ হতো না যদি আপনারা সতর্ক দৃষ্টিতে ডেভিল হান্ট ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই শুরু করতেন। এ বিবষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যায়াযায়দিন প্রতিদিনকে বলেন, দেশের পরিস্থিতি চিন্তা করে সময়ের সঙ্গে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেই সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। ছয় মাস পর সরকারের সিদ্ধান্ত নিতে হলো অপারেশন ডেভিল হান্টের। এ ধরনের সিদ্ধান্ত আরো আগে নেয়া উচিত ছিল। তাহলে দেশ এত টালমাটাল অবস্থায় যেত না।

তিনি বলেন, অপারেশন ডেভিল হান্ট সঠিকভাবে কার্যকর করতে হবে। নইলে সরকারের এই উদ্যোগ ভেস্তে যাবে। প্রতিদিন আমরাও নজর রাখছি। অপারেশন ডেভিল হান্টের নামে যেন নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন। কেননা মাঠপর্যায়ে কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে কাউকে হয়রানি করলে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না।

অপারেশন ডেভিল হান্টকে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক। তিনি নেতাকর্মীর এ অভিযানে সেনাবাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে আমিনুল হক বলেন, আমরা তো একটি সভ্য জাতি, তাহলে সরকার গঠনের ছয় মাস পরে এই ধরনের ভাঙচুর কেন? এর দায়ভার কে নেবে? এই দায়ভার আপনাদেরই (অন্তর্বর্তী সরকার) নিতে হবে। কারণ এ ধরনের বিশৃঙ্খলা আমরা জাতি হিসেবে কখনোই প্রত্যাশা করি না। বর্তমানে প্রশাসনে কোনো স্থিতিশীলতা আসেনি। আজকে দেশের দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বিচার বিভাগেও গতিশীলতা ফিরে আসেনি। তাহলে এই অন্তর্বর্তী সরকার গত ছয় মাস ধরে কী করল!

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু করেছে। ডেভিল বলতে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকেই বুঝি। বহুদিন পর অন্তর্বর্তী সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। সাম্প্রতিক সময় সারা দেশে বিশৃঙ্খল ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আজিজুল বারী হেলাল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ছয় মাস পরে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা কেন? আমরা এসব চাই না।

তিনি বলেন, বিএনপি ১৬ বছর আন্দোলনের আগুনে পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। কোনো ধরনের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। চারদিকে প্রতিবিপ্লব উঁকিঝুঁকি মারছে, তবে সেটা হতে দেয়া হবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে বিপ্লব ও গণতন্ত্রের প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করতে হবে। স্বৈরাচার সরকার যাতে ফিরে আসতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *