Jaijaidin

জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রথম ধাপের কাজ ২০২৬ সালের মধ্যেই শেষ

Shah Alam Soulav
4 Min Read

জবি প্রতিনিধি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রথম ধাপের কাজ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পটির সেনাবাহিনী থেকে নিযুক্ত প্রকল্প পরিচালক (পিডি) লে. কর্নেল ইফতেখার আলম।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ তথ্য জানান।

প্রকল্প পরিচালক ইফতেখার আলম বলেন, “আমাদেরকে বলা হয়েছে প্রথম ধাপের কাজ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে। তবে আমরা এর আগেই শেষ করার চেষ্টা করবো। দ্বিতীয় ধাপের কাজের পরিকল্পনাও চলবে, তবে এর দৃশ্যমান কাজ ২০২৬ সালের পরই শুরু করা সম্ভব হবে।”

তিনি জানান, “প্রথম ধাপের কাজের মধ্যে রয়েছে ক্যাম্পাসে বালি ভরাট করা, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন তৈরি এবং একটা বেসক্যাম্প তৈরি করা। যেন দ্বিতীয় ধাপের কাচ পরিচালনা করা যায়।”

বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হলে স্টিলের স্ট্রাকচার নির্মাণ বাস্তবতায় সম্ভব না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হল দুইটির স্থান এমন জায়গায় যে এখানে স্টিল স্ট্রাকচারের কাজ চালানোর জন্য যে ক্রেন আনা দরকার সেটা সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। কারণ সেখানে রাস্তাগুলো ১৪ থেকে ২২ ফুটের মধ্যে। এখানে স্টিলের স্ট্রাকচারের পরিবর্তে কংক্রিটের স্থাপনা নির্মাণ বেশি টেকসই হবে। তাছাড়া স্টিল স্ট্রাকচার সময়সাপেক্ষ। স্থানীয় কমিউনিটির কিছু আপত্তি এসেছে, যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।”

এ বিষয়ে ছাত্রদল জবি শাখার আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারি। আশা করি, তারা যৌক্তিক বিষয়গুলো বুঝতে পারবেন।”

এসময় শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, “পূর্বে পুরান ঢাকার স্থানীয়দের সাথে ঝামেলার কারণে এখন স্টাফরা সেখানে থাকবে। ভবিষ্যতে এখানে আমাদের বোনেদের রাখা হলে তাদের সাথে স্থানীয়রা ঝামেলা করবে না তার কী নিশ্চয়তা আছে। পুরান ঢাকায় মূল ক্যাম্পাস থাকবে। এখানেই ছাত্রদের জন্য হল প্রয়োজন। তাই বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হলে কংক্রিটের স্থায়ী কাঠামো হলে সেটাই ভালো হবে।”

ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, “আমাদের মূল ক্যাম্পাসকে কেন্দ্র করেই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা উচিত।”

জবি সংস্কার আন্দোলনের সদস্য নওশিন নাওয়ার জয়া বলেন, “বর্তমানে ছাত্রীদের জন্য একটি হল আছে, তাই এখন ছাত্রদের হল বেশি জরুরি।”

শিক্ষার্থীদের এসকল দাবির প্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা এডিসি পারভেজ বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি আইনগত কাঠামোর মধ্যে কিভাবে ফ্যাসিলিটেট করা যায়। আইনগতভাবে অস্থায়ী বা স্থায়ী কাঠামো করার সুযোগ নাই। স্ট্রাকচারের বিষয়টা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে। লোকাল কমিউনিটিকে রেসপেক্ট না করলে সাসটেইনেবল হয় না।”

শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া ২০০৫ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে বলে আমরা বিগত সময়ে নানাভাবে বঞ্চিত হয়েছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে ঢাকা থেকে সরিয়ে অজপাড়াগাঁয়ে পাঠানোর জন্য তারা নতুন ক্যাম্পাস দিয়েছে। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই এই ক্যাম্পাস আমাদেরই থাকবে। কেরানীগঞ্জে হবে আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, “২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই দ্বিতীয় ধাপের পরিকল্পনা হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রথম ধাপে একটি ছাত্রহল অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যদি বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হলের নির্মাণে দেরি হয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ৭ একর জমিতে বালু ভরাট করে অস্থায়ীভাবে ছাত্রদের থাকার ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে।”

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন, শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন, নাসির আহমেদ, প্রক্টর, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *