উপমহাদেশের শ্রমিক আন্দোলন তথা কমিউনিস্ট আন্দোলনের পুরোধা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কমরেড অনিল মুখার্জীর ৪৩তম প্রয়াণবার্ষিকীতে ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকার পোস্তগোলা স্মৃতিস্তম্ভে পার্টির সূত্রাপুর থানা কমিটির উদ্যোগে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
সিপিবি সূত্রাপুর থানা কমিটির সভাপতি বিকাশ সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কৃষক নেতা জাহিদ হোসেন খান, সূত্রাপুর থানা কমিটির সদস্য শ্রমিক নেতা সাইফুল ইসলাম সমীর, হামিদুর রহমান ইকবাল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা প্রিজম ফকির প্রমুখ।
নেতারা বলেন, আন্দামান ফেরত বিপ্লবী কমরেড অনিল মুখার্জীর স্বপ্ন ছিল মানুষের মুক্তি, সমাজতন্ত্র। ৭০ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নিরলস সংগ্রামে ব্রতী ছিলেন। শ্রমিক তথা মেহনতি মানুষের শোষণমুক্তির সংগ্রাম পরিচালনায় নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি প্রায় ২৪ বছর হয় জেলে, না হয় আত্মগোপনে ছিলেন। রাজনৈতিক কাজের অংশ হিসেবেই তিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এই মহান নেতার জীবনসংগ্রাম আমাদের প্রেরণার উৎস।
সিপিবি নেতারা বলেন, আলো দিয়েই অন্ধকারকে দূর করতে হয়। ব্যক্তিগত অথবা মুষ্টিমেয় সন্ত্রাসবাদী তৎপরতায় রোমান্টিক উত্তেজনা সৃষ্টি করা যায়, কিন্তু সমাজ বদল করা যায় না। সমাজ বদলের জন্য প্রয়োজন দৃঢ় রাজনৈতিক আদর্শ এবং দৃপ্ত সংকল্প। কমরেড অনিল মুখার্জী এবং তার সহযোদ্ধা কমিউনিস্টরা শ্রেণিহীন, শোষণ-বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রগঠন আন্দোলনে চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। তারা বলেন, সেই পথেই বর্তমান প্রজন্মকে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং সকল অপশক্তির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনায় পূর্ণগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামে অংশ নিতে হবে।
সমবেত কণ্ঠে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল গাওয়ার মাধ্যমে স্মরণসভা সমাপ্ত হয়।