Jaijaidin

টিউলিপের পর, এবার তোপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

Shah Alam Soulav
3 Min Read

যাযাদিপ্র ডেস্ক

গত বছর যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে জয় পায় লেবার পার্টি। এরপর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন কেয়ার স্টারমার। তিনি নতুন সরকারে যে মন্ত্রিসভা গঠন করেন সেখানে টিউলিপ সিদ্দিককে সিটি মিনিস্টারের দায়িত্ব দেন। তার কাজ ছিল দেশটির আর্থিক বিষয়াবলীতে সম্ভাব্য দুর্নীতি প্রতিরোধ করা। তবে যে দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়েছিল, সেই দুর্নীতির অভিযোগের মুখে বাধ্য হয়ে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছে তাকে। টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের খুব কাছের বন্ধু হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

টিউলিপ পদত্যাগ করার পর এবার নিজ দলের সদস্যদের তোপের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্টারমার। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে এক লেবার এমপি বলেছেন, “টিউলিপকে মন্ত্রী বানানোর সিদ্ধান্ত ছিল আত্মঘাতী গোল। সবাই জানত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাথে তার সম্পর্ক ছিল। যাদের অনেক ক্ষমতা ও অর্থ আছে। তাকে এই দায়িত্ব দিয়ে এতসব কিছু করার বিষয়টি কী ভালো ছিল?”

এদিকে লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে টিউলিপ সিদ্দিকের, যেটির মূল্য ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা)। গত ৩ জানুয়ারি এক প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, ২ শয্যাকক্ষের সেই ফ্ল্যাটটি ২০০৪ সালে টিউলিপকে উপহার দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের এক ডেভেলপার।

মোতালিফ বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। এই ফ্ল্যাটের তথ্য সামনে আসার পর ব্যাপক চাপের মুখে পড়েন টিউলিপ। এরপর বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এসবের পর তার মন্ত্রিত্ব নড়েবড়ে হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে সরে যেতে হয়েছে তাকে।

৪২ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির সদস্য হন মাত্র ১৬ বছর বয়সে। ২০১৫ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড আসন থেকে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হন। তারপর থেকে এ পর্যন্ত ওই আসনে চার বার প্রার্থী হয়েছেন টিউলিপ, প্রতিবারই জয়ী হয়েছেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তাকে যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি ও নগর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার।

পদত্যাগপত্রে টিউলিপ দাবি করেছেন তিনি কোনো অন্যায় করেননি এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। তবে টিউলিপ স্বীকার করেন, তিনি মন্ত্রী থাকলে সরকারের কাজে বিঘ্ন ঘটবে। লেবারের অন্য সদস্যরা টিউলিপকে মন্ত্রির দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুললেও দেশটির ট্রেজারির প্রধান সেক্রেটারি ড্যারেন জোনস টাইমস রেডিওকে বলেছেন, “আমি মনে করি না প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন আছে। স্বাধীন তদন্ত শেষ হয়েছে। এরপর টিউলিপ সরকার থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

অপরদিকে বিরোধী দলীয় নেত্রী কেমি বাডেনোচ প্রধানমন্ত্রীকে দুর্বল হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, টিউলিপের সঙ্গে ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব থাকায় তিনি তার পদত্যাগের বিষয়টি বিলম্বিত করেছেন কি না। বাডেনোচ বলেন, “গত সপ্তাহে এটি স্পষ্ট হয়েছিল টিউলিপ তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হয়ে পড়েছেন। তা সত্ত্বেও নিজের কাছের বন্ধুকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী তার পদত্যাগের বিষয়টি বিলম্বিত করেছেন।”

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *