ওসমানীনগর(সিলেট)প্রতিনিধি
ঘুষ-দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশ করায় ৫টি সাজানো মামলায় সাংবাদিক শামীম আহমদ দিশেহারা হয়ে প্রায় ১যুগ আদালতে ধর্ণা দিয়ে পৈত্রিক সহায়-সম্বল বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ২০১২-১৩ সালে সিলেটের বালাগঞ্জ থানার ওসির দায়িত্বে ছিলেন আব্দুছ ছালেক। ওসির বেপরোয়া ঘুষ-বাণিজ্যের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষের নানা প্রতিবাদী কর্মসূচিতে উত্তাল হয়েছিল শান্তির জনপদ বালাগঞ্জ।
জানা গেছে, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৩সালের ১০-১১জুলাই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন শামীম। সংবাদ প্রকাশের পর ১২জুলাই শামীমের নামে একটি জিডি এবং ওই জিডি থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ মামলাও রেকর্ড করেন ওসি। পরে মামলাবাজ এক ব্যক্তিকে বাদী বানিয়ে শামীমকে প্রধান অভিযুক্ত করে ২সেপ্টেম্বর মারামারির অভিযোগে একটি মামলা রেকর্ড করেন ওসি। ওই মামলায় শামীমের ৭০বছর বয়সি বৃদ্ধ পিতাসহ তার পরিবারের ৬সদস্যকে অভিযুক্ত করে হয়রানি করা হয়। এদিকে, ওসির ব্যক্তিগত আক্রোশে ডিএমপির চক বাজার থানায় ১৩সালের ২৯অক্টোবরে বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনে ১টি ও ৫নভেম্বর একই আইনে দায়ের করা ২টি গায়েবি মামলার এজাহারে শামীমের নাম কৌশলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। একসাথে ৩টি গায়েবি মামলা ও পরোয়ানার বিষয়টি জানতে পেরে হতভম্ব হন তিনি। মামলার এজাহারে শামীমের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানায় অসঙ্গতি থাকার পরও মামলা এবং পুলিশি হয়রানি থেকে রেহাই পাননি তিনি। ভুক্তভোগী শামীম ১টি জাতীয় দৈনিক যুগান্তর ও ১টি স্থানীয় পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি। এদিকে ওসির বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট একাধিকবার লিখিত অভিযোগ-আবেদন দেয়া হলেও তাদেরকে ম্যানেজ করে বারবার শ্রেষ্টত্বের খেতাব ও পুরস্কার বাগিয়ে নিয়ে এখনও বহাল তবিয়তে আছেন তিনি। সাজানো মামলায় নিঃস্ব হয়ে ৪৫বছরে ঘর-সংসার না করা শামীম বলেন,ওসি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও ফ্যাসিস্ট সরকারের ত্যাগি-লড়াকু লোক দাবি করতেন। তার রোষানলে পড়ে বারবার মিথ্যা মামলায় হয়রানি হয়েছি। পৈত্রিক জমি বিক্রি করে মামলার খরছ জুগিয়েছি। এসব মামলায় পরোয়ানা থাকায় বাবার অসুস্থতা ও মৃত্যুকালে পাশে থাকতে পারিনি। সরকারি উদ্যোগে এসব মামলা প্রত্যাহার হলে ওসিসহ কথিপয় দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবো।
তৎকালীন বালাগঞ্জ থানার ওসি আব্দুছ ছালেক ওই সময়ে শামীমের নামে জিডি ও মামলা নিয়েছিলেন বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, ডিএমপি’র চকবাজার থানার মামলায় বিষয়ে আমার কোনো হাত ছিল না।