Jaijaidin

হত্যাকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না: প্রশ্ন রিজভীর

Shah Alam Soulav
5 Min Read

যারা আন্দোলনকারীসহ শিশু বাচ্চাদেরকে হত্যা করেছে, তাদের কি বিচার হবে না? অন্তর্বতী সরকারকে এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী- পুলিশ সদস্যরা মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে শিশু , তরুণ, যুবকদের। অথচ তাদেরকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না?

তিনি বলেন, জুলাই অগাস্টের হত্যাকারীদের সবার আগে গ্রেফতার করে বিচারে মুখোমুখি করা উচিত ছিল সরকারের। এ সরকার তো রক্তস্নাত সরকার, কারণ শিশু- যুবক -কৃষক -শ্রমিকদের রক্তের ওপর এ সরকার গঠিত হয়েছে। এ সরকারের দায়িত্ব জনগণের আহারের নিশ্চয়তা দেওয়া।

আজ চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে গেন্ডারিয়া আদর্শ স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র শহিদ শাহরিয়ার খান আনাসের পরিবারের সাথে দেখা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বার্তা পৌঁছে দিতে এসে এ কথা বলেন রিজভী।

আনাসের চিঠি পড়ে আপ্লূত হয়ে গেছে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে , এই বাচ্চারা এত উদ্দীপ্ত দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য , একটা মহান কিছু আবিষ্কারের জন্য, আদায়ের জন্য। এই বয়সে যে তারা (ছাত্র জনতার আন্দোলনের শহীদরা) এইরকম সংকল্প হতে পারে, এই চিঠিতে আমি তা পেয়েছি। আনাসের চিঠিটি পড়ে শোনান এবং বলেন, ‘এই চিঠিটি পড়ার পর আমাদের জীবনকে মনে হয়েছে তুচ্ছ, এই আত্মদানকারী বীর শহীদরা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে , আমার মনে হয়েছে, তাদের কাছে আমরা তুচ্ছ, আমরা ম্লান হয়ে গেছি।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এই নিষ্পাপ ছেলেগুলোকে কেন শেখ হাসিনার পুলিশ হত্যা করেছে ? -শুধু শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্যই করেছে। আর তার পরিবার ও কাছের মানুষদের আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ করার জন্য। এজন্যই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এই বাচ্চাদেরকি কেও হত্যা করতে দ্বিধা করেননি।

আজকের শেখ হাসিনার জন্য কেউ কেউ মায়া কান্না কাঁদে এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আনাসের ও আনাস ইয়াসিনের পরিবারের আর্তনাদ ও মা’দের কান্না শুনতে বলি তাদেরকে। যাদের রক্তের বিনিময়ে পরিবর্তন পেলাম ,১৭বছরের বসে থাকা হিংস্র ক্ষুধার্ত হায়না পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তারপরও শেখ হাসিনার জন্য যারা মায়া কান্না কাঁদেন , তাদের প্রতি ধিক্কার জানানো ছাড়া আর কিছু বলার নেই’।

ছাত্র- জনতা রক্তের ওপর দিয়ে অন্তরবর্তী সরকার গঠিত হয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘এটাই ইউনুস সরকারকে বুঝতে হবে। কেন আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার প্রেসক্রিপশনে সাবান গুড়া দুধের ও ওষুধের দাম বাড়বে ? কেন সেগুলোর পর ভ্যাট বাড়ানো হবে? এটার জন্যই কি আনাস -জুনায়েদরা রক্ত দিয়েছে?

জনগণ যদি তার জিনিসপত্র স্বাভাবিক মূল্যে কিনতে না পারেন তাহলে জুনায়েদ- আনাস -ইয়াসিনদের রক্ত বৃথা যাবে। সেই সাথে তিনি বলেন,’ আজ ইতিহাস বিকৃত করেছে শেখ হাসিনা, আর শহীদরা তো রক্ত দিয়েছেন, প্রকৃত ইতিহাস লেখার জন্য। তাহলে এখনো কেন আওয়ামী লীগের দস্যরা দোষরা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসে থাকবে? এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।

তিনি বলেন, আজকে জানুয়ারির ৮ তারিখ এখনো ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের বই পাননি। আবার দেখা গিয়েছে প্রিন্টিং মিসটেক, এর জন্য কে দায়ী? এর জন্য দায়ী যারা মুদ্রণের সাথে জড়িত, আর সেই ব্যক্তি হচ্ছেন শেখ হাসিনার একজন ঘনিষ্ঠ দোসর।

রাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, ‘মানুষের রক্ত পান করতে আনন্দ বোধ করতেন শেখ হাসিনা, সেই মানুষটি আবার ফিরে আসবেন তার কোন বিচার হবে না? যারা এই শিশু বাচ্চাদেরকে হত্যা করেছে, তাদের কি বিচার হবে না ? আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ সদস্যরা মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে , তাদেরকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? প্রশ্ন রাখেন রিজভী।

অনেক প্রতিষ্ঠান স্বৈরাচারে দোসরদের নামে করা হয়েছে এগুলোর নাম পরিবর্তন করে জুলাই অগাস্টের শহীদদের নাম করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে রাখার জন্য তার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে, এটাকে বাংলাদেশের মানুষ ইতিবাচকভাবে নেয়নি । যেখানে গণতন্ত্র থাকবে সেখানে আইনের শাসন থাকবে কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেখেছি ভারত আইনের শাসন মানে না। সব সময় আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে কাজ করে ভারত।

“আমরা বিএনপি পরিবার”-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন ও সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুনের সঞ্চালনায় আয়োজিত আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জি. আশরাফ বকুল, বিএনপি’র সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, স্বেচ্ছাসেবক দল সহ সভাপতি ডাঃ জাহিদুল কবির, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন, ছাত্রদল সহ সভাপতি ডাঃ আউয়াল-সহ নেতৃবৃন্দ।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *