Jaijaidin

সময়ক্ষেপণের জন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করলে জনগণ মেনে নেবে না : সালাহউদ্দিন আহমেদ

Shah Alam Soulav
5 Min Read

বিশেষ প্রতিনিধি

বেশি সময়ক্ষেপণের জন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করলে জনগণ মেনে নেবে না বলে হুশিয়ারি দিয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভোটার তালিকা তৈরি হয়ে যাবে। এরপর ডেলিমিটাশনসহ (সীমানা নির্ধারন) অন্যান্য আইন প্রক্রিয়ার কাজ চলবে। সেগুলো কাজ শেষ করতে খুব বেশি সময় লাগবে না। এসব কাজ একই সাথে চলতে পারে। সুতরাং জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠাতা করুন।

তিনি বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশ মানুষ গনঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখান করেছে, তাদের বিতারিত করেছে। সেই আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ নামে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিচার দাবি জানাচ্ছি। বিচার পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নির্ধারণ হোক আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচন করতে পারবে কিনা। সংবিধানের বিধান মোতাবেক আপনারা আইন প্রস্তুত করুন।

বুধবার (৫ ফ্রেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘জাতীয় ঐক্য ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগকে রাজপথে কতোদিন পুলিশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখবেন? আপনারা বলছেন আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দিবেন না, কিন্তু কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন ? আমরা বলেছিলাম সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। আন্তর্জাতিক আদালতের আইন সংশোধন করার দাবি জানিয়েছিল জনগণ। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তীতে কেবিনেটে তা বাতিল করা হয়। একদিকে বলবেন আওয়ামী লীগ রাজনীতি নিষিদ্ধ হোক, আবার বিচার করবেন না, রাজপথে পুলিশ দিয়ে বাধা দেবেন, এতো স্ববিরোধীতা ঠিক নয়।

‘সর্ষের মধ্যে ভূত’ রেখে কখনো প্রধান উপদেষ্টা সফল হতে পারবেন না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সুতরাং প্রশাসন হোক, বিচার বিভাগ হোক বা নির্বাচন ব্যবস্থার মধ্য থেকে ফ্যাসিবাদদের পরিষ্কার করতে হবে। গণতান্ত্রিক সংস্কারের মধ্যে দিয়ে সাংবিধানিক রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠাতা করতে চাই। এজন্য নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে অগ্রাধিকার দিতে হবে। নির্বাচনমুখী সংস্কারের জন্য স্বল্পমেয়াদী সংস্কার চিহ্নিত করতে হবে। মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কার জন্য বিএনপি ৩১ দফায় অনেক আগেই দিয়েছে। ২০১১ সালে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেছিল সেই বিধান আবারও সংযুক্ত হয়েছে। স্বীকৃত দিতে হলেও নির্বাচিত সরকার দরকার।

বেশি সময়ক্ষেপণের জন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করলে জনগণ মেনে নেবে না বলে হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ভোটার তালিকা তৈরি হয়ে যাবে। এরপর ডেলিমিটাশনসহ (সীমানা নির্ধারন) অন্যান্য আইন প্রক্রিয়ার কাজ চলবে। সেগুলো কাজ শেষ করতে খুব বেশি সময় লাগবে না। এসব কাজ একই সাথে চলতে পারে। সুতরাং জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠাতা করুন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে সবার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত একটি নির্বাচন রোডম্যাপ প্রদান করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা বলছি জুলাই আগস্টে নির্বাচন সম্ভব। তার আগে নির্বাচনের জন্য আইনি ও প্রতিষ্ঠানিক কিছু সংস্কার করে আমরা নির্বাচনমুখী হতে চাই। কেউ কেউ বলছেন নির্বাচন আগে, আবার কেউ কেউ বলছেন সংস্কার আগে। নির্বাচন ও সংস্কার দুইটাকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। যতদিন দেশ থাকবে ততদিন আমাদের সংস্কারের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ৬ মাস সময় যথেষ্ট সময়। আজকে প্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এর আগে আরও চারটি সংস্কার জমা দিয়েছে। আমাদের সংস্কার কমিশনের কাছে আমরা আমাদের পরামর্শ জমা দিয়েছি। জানুয়ারিতে আলোচনার করার কথা ছিল। আর এখন বলছেন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি আলোচনা করবেন। এরপর আলোচনার নামে কতোদিন পার করবেন?

শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থেকে বিশৃঙ্খলা কারার জন্য অর্থ বিনিয়োগ করেছে প্রধান উপদেষ্টা এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার দোসররা উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত আছেন। আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম বাদ দেওয়ার জন্য, কিন্তু আপনারা শোনেন নাই। শেখ হাসিনার দোসররা প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বহাল রয়েছে। এদের বহাল রেখে আপনি বেশি দূর এগোতে পারবেন না। শেখ হাসিনার নিয়োজিত মন্ত্রীপরিষদ সচিব ২ মাস ৫ দিন চাকরি করে অবসরে গেছেন। কিন্তু তিনি আপনার হয়ে কাজ করছেন নাকি শেখ হাসিনার পারপাস সার্ভ করেছেন। এভাবে সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে আছে, আপনি কিভাবে সফল হবেন?

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল খানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম পারভেজের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান প্রমুখ।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *