Jaijaidin

সঞ্চয়পত্র বিক্রি স্বাভাবিক হতে পারে বৃহস্পতিবার থেকে

Shah Alam Soulav
4 Min Read

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সার্ভার আপগ্রেডেশনের কাজ চলছে। এতে প্রায় পাঁচ দিন বন্ধ রয়েছে সব ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি। তবে কাজ শেষের দিকে, বৃহস্পতিবারের মধ্যে সার্ভার চালু হতে পারে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) অধিদপ্তর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অধিদপ্তরের সার্ভারের কাজটি পরিচালনা হয়ে থাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে। গত বুধবার থেকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সার্ভার আপগ্রেশনের কাজ চলছে। ওই দিন থেকেই বন্ধ রয়েছে সার্ভার অর্থাৎ সার্ভার ডাউন রয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে যায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি বা ভাঙানো।

অন্যদিকে, আগে থেকে গ্রাহের কাছে কোনো নোটিশ না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। বিশেষ করে সঞ্চয়পত্র কিনতে ব্যাংকে ভিড় করলেও কর্মকর্তারা তাদের আশ্বাস দিতে পারেন না। প্রায় পাঁচ দিন ধরে তারা ঘুরছেন, পাচ্ছেন সঠিক না কোনো তথ্য। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। তবে অধিদপ্তর বলছে, সার্ভার আপগ্রেশনের কাজ চলমান থাকায় সাময়িক বন্ধ রয়েছে বিক্রি। মন্ত্রণালয় থেকে কাজ হচ্ছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যে সার্ভার চালু হতে পারে, ফলে আগের মতোই কিনতে পারবেন গ্রাহক।

বিগত চার দিনের মতো আজ মঙ্গলবারও (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে দেখা যায় নারীসহ একাধিক গ্রাহককে। তাদের সবাই এসেছেন সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য, কেউ এসেছেন ভাঙানোর জন্য। আবার কেউ এসেছেন তথ্য (কবে ঠিক হবে সার্ভার) জানার জন্য। তাদের অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করছেন। কারণ হেল্পডেস্ক থেকে ফর্ম পূরণে সহায়তা করা হলেও সার্ভার চালুর বিষয়ে কোনো তথ্য নেই কর্মকর্তাদের কাছে। তারা বলছেন, সঞ্চয় অধিদপ্তর সার্ভার চালু করলে আমরা ফরম জমা নিতে পারবো।

বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, ‘গত বুধবার থেকে সার্ভার ডাউন। কবে ঠিক হবে, আমরা এ বিষয়ে কোনো কিছু জানি না। সার্ভার ঠিক হলে সবাই সেবা পাবেন। তবে সার্ভার ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ফর্ম নিতে পারছেন, জমা হচ্ছে না। কেউ চাইলে কাউন্টারে রেখে দিতে পারেন, সার্ভার ঠিক হলে আমরা জমা করে নেবো। সার্ভার ঠিক হওয়া অধিদপ্তরের কাজ, বলছিলেন তিনি।’

সঞ্চয় অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও জনসংযোগ) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সার্ভারের পুরো কাজটা অর্থমন্ত্রনালয়ের অর্থ বিভাগের একটা প্রজেক্ট। এটা অর্থ বিভাগের ওই প্রজেক্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সেখান থেকে কাজ চলছে।’

এ বিষয়ে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও জনসংযোগ) এবং উপসচিব মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন,স ‘সার্ভার মেইনটেনেন্স এর কাজ চলছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সবাই সেবা নিতে পারবেন।’

এদিকে, চলতি মাস থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বাড়ছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত সঞ্চয় কর্মসূচিগুলোর (স্কিমের ধরন অনুযায়ী) মুনাফার হার বেড়ে হতে যাচ্ছে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গতকাল মঙ্গলবার বর্ধিত হার নির্ধারণের আদেশ জারি করতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে (আইআরডি) অনুরোধ করেছে। অর্থ বিভাগের তৈরি এ বিষয়ে প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সুপারিশ এসেছে অর্থসচিবের নেতৃত্বাধীন নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা কমিটি (সিডিএমসি) থেকে। যাকে সহায়তা করেছে অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অণুবিভাগ।

মুনাফার এ হার ১২ দশমিক ২৫ থেকে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত। অর্থাৎ বর্ধিত হারের কারণে কোনো সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১২ শতাংশের কম হবে না। সবচেয়ে কম মুনাফা (১২.২৫ শতাংশ) পাওয়া যাবে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের বিপরীতে। সবচেয়ে বেশি মুনাফা (১২.৫৫ শতাংশ) পাওয়া যাবে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে। সুদহার পরিবর্তনের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের ধাপেও পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে পাঠানো চিঠিতে। বর্তমানে ১৫ লাখ টাকা; ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা এবং ৩০ লাখ ১ টাকার বেশি, এই তিন ধাপ রয়েছে। প্রতিটি ধাপে আলাদা মুনাফার হার রয়েছে। তবে নতুন নিয়মে দুটি ধাপের কথা বলা হয়েছে। একটি ধাপে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারীরা। আর অপর ধাপে ধাপে এর ওপরের বিনিয়োগকারীরা থাকবেন।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *