নিজস্ব প্রতিনিধি
সংস্কার নামে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন হতে পারে এমন আইন চালু করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে সংখ্যানুতিক পদ্ধতির ভোটকে সমর্থন করি না। ছোট দলগুলো কত শতাংশ ভোট পাবে, তারা আসন পাবে কি? পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ হয়তো স্বাভাবিকভাবে ২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে যেতে পারে। তাহলে দেখা যাবে ৭৫টি আসন পাবে, এটা আমি চাই না। যে আইনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এতো মানুষকে হত্যা করেছে, পুরো দেশকে শেষ করে দিয়েছে, তাদের পুনর্বাসন হবে এমন আইন চালু করা যাবে না।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘সংস্কার থেকে নির্বাচন কতদূর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, সংস্কার এখনো শুরু হয়নি৷ মুলত সংস্কার বলে পায়তারা করা হচ্ছে। ১৫টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে ছয়টা কমিশন তাদের ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে। এই নিয়ে চলতি মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করতে চাইছেন। দেশের জনগণের সংস্কার ফোকাস, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য ও জনগণের সম্মতিতে সংস্কার করা হবে। তারা যদি সম্মতি না দেয় তাহলে সংস্কার হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো ও অংশীজনরা এখন পর্যন্ত কয়টি সংস্কারের ব্যাপারে একমত হয়েছে? দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পালামেন্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়নি। জনগণও ঠিকমত বোঝে না।
তিনি বলেন, পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। কিন্তু এখানে প্রশ্ন আছে সবাই বলেছে পরপর দুইবার বেশি হতে পারবেন না কিন্তু একবার গাফ (অবসর) দিয়ে আবার দাড়াতেদ পারবেন। এখানে আইনি ফাঁকফোঁকড় রয়েছে। বাংলাদেশকে চার প্রদেশে ভাগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কিন্তু কতোজন একমত হয়েছেন? দেশের মানুষ সংবিধান বুঝতে পারে এমনভাবে সংবিধান রচনা করতে হবে।
মান্না বলেন, যদি দেশটা গঠন না করতে পারি তাহলে এতো জীবন দিয়ে লাভ কি? জীবনদান তো বৃথা হয়ে গেলো। গত ১৫ বছর শেখ হাসিনা দেশে যে গজব তৈরি করেছিলেন। এ থেকে বের হতে না পারলে আবারও গজবের দেশ থাকবে। এখান থেকে দেশকে পরিবর্তন করার জন্য সবাই সংস্কারের একমত হয়েছি। যদি আমরা ভালো থাকতে চাই তাহলে এই পরিবর্তন দুই দিন হলেও দরকার। এজন্য অবশ্যই গুনগত সংস্কার আমাদের লাগবে।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার প্রস্তাব প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কিন্তু আইন সংস্কারের জন্য কোনো স্বল্প মেয়াদি কোনো প্রস্তাব নেই। রাজনৈতিকগুলো তাদের প্রস্তাবগুলো লিখিতভাবে দিয়েছে। এখানে আলোচনার দরকার কি। কয়টা প্রস্তাব মিলে তা বাছাই করলেই তো হয়ে যায়। আমি মনে করি, ১৫ দিনের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্যে সম্ভব। এই সংস্কারগুলো মিলেছে, এগুলো সংস্কার করতে এতোদিন সময় লাগে। এরপর ২ বা চার মাস পর ভোট দেওয়া হবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার সেই পথে যাচ্ছে না।
নাগরিব ঐক্যর সভাপতি বলেন, আমরা ভালো সরকার, ভালো শাসক চাই। এজন্য দরকার ভালো রাজনৈতিক দল। ভোট দেওয়ার আগে জনগণ দেখাশুনে ভোট দেবেন। যদি দুই নাম্বার মনে হয় তাহলে তাদেরকে ভোট দেবেন না। সবার আগে রাজনৈতিক দলের সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু ভালো নির্বাচনের জন্য সবার আগে পুলিশ সংস্কার দরকার। অফিস আদালতে এখনো ঘুষ-দুর্নীতি এখনো চলছে। বর্তমান থেকে নতুন বাংলাদেশ কতোদূর?
বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম সাহেল এর সভাপতি আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিজয় কান্তি সরকার প্রমুখ৷