যাযাদিপ্র ডেস্ক
সাংবাদিক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে যায়যায়দিন পত্রিকার কার্যালয় দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবদিকদের প্রশ্নের মুখে বিপর্যস্ত হয়ে তড়িঘড়ি সংবাদ সম্মেলন শেষ করেছেন আয়োজকরা।
বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ঢাকার তেজগাঁওয়ে যায়যায়দিন পত্রিকার কার্যালয় দখলে অভিযোগ আনেন এইচআরসি মিডিয়া লিমিটেডের কর্মকর্তারা। তারা সম্প্রতি যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল হওয়ার পেছনেও সাংবাদিক শফিক রেহমানকে দোষারোপ করেন। তারা বলেন, শফিক রেহমানকে সামনে রেখে একটি চক্র এসব করছে।
তবে কারা এই চক্র তা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তারা খোঁজ খবর নিচ্ছেন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। একইসঙ্গে পত্রিকাটি কীভাবে শফিক রেহমান এইচআরসির কাছে বিক্রি করেন সেসব কাগজপত্রও লিখিত বক্তব্যের সঙ্গে যুক্ত করে সাংবাদিকদের বিতরণ করেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, ওয়ান-ইলেভেনে সেনাপ্রধানের চাপে যায়যায়দিন থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বলে শফিক রেহমান ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, যা একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে- সে ক্ষেত্রে এইচআরসি এতো বছর কেন শফিক রেহমানের পত্রিকা এবং কার্যালয় দখল করে রেখেছে? এমন প্রেক্ষাপটে দখল কি এইআরসি করেছে না কি শফিক রেহমান? এমন প্রশ্নের উত্তরে কর্মকর্তারা বলেন, শফিক রেহমানের এ দাবি মিথ্যা।
শফিক রেহমান যে পত্রিকা বিক্রি করেছেন, ভবন বিক্রি করে টাকা নিয়েছেন- সেই লেনদেনের কোনো বৈধ প্রমাণ আছে? এ প্রশ্নের জবাবে কর্মকর্তারা বলেন, তাকে টাকা দেওয়া হয়নি, তার ব্যাংকের ঋণ শোধ করা হয়েছে। অর্থাৎ- এইচআরসির মালিকানাধীন যে ব্যাংক রয়েছে, সেসব ব্যাংক থেকে শফিক রেহমানের ঋণ শোধের জাল কাগজ তৈরি করে, সেটাকে দেখানো হয়েছে কেনাবেচার লেনদেন।
সাংবাদিকদের আরও অসংখ্য যৌক্তিক প্রশ্নের মুখে অবশেষে সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করে দেন আয়োজকরা।
এদিকে এই সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে ‘‘২৪- এর ছাত্রখুনী যায়যায়দিন দখলকারী বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাঈদ হোসেন চৌধুরীর কুকীর্তি’’ শিরোনামে একটি হ্যান্ডবিল সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় বৈষম্যবিরোধী সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে।
হ্যান্ডবিলে ছাত্রজনতা হত্যায় সাঈদ হোসেন চৌধুরীর অর্থায়ন এবং নারায়নগঞ্জে ছাত্র হত্যার মামলার আসামি হওয়া, ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা মেরে ঋণ খেলাপি হওয়া, আমদানি-রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার, যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুরের আদালতে তার মালিকানাধীন জাহাজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা এবং করফাঁকির অভিযোগে সাঈদ হোসেন চৌধুরী যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়াসহ বিশদ তথ্য উল্লেখ করা হয়।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে ডিক্লারেশন বাতিল হওয়া যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী রুকুনউদ্দিন আহমেদ লিখিত বক্তব্য পাঠ করা শুরু করেন। কয়েক সেকেন্ড পরেই বক্তব্যের বাকি অংশ পাঠ করতে অন্য কর্মকর্তাদের বলেন। এরপর তিনি অসুস্থ জানিয়ে লিখিত বক্তব্য তার পক্ষে কর্মকর্তারা পাঠ করেন। এ সময় এইচআরসি মিডিয়ার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।