Jaijaidin

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ

Shah Alam Soulav
3 Min Read

যাযাদি ডেস্ক

ভারতে সংখ্যালঘুরা ক্রমবর্ধমান অমানবিক আচরণের শিকার হচ্ছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের স্বাধীন প্যানেল ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডমের (ইউএসসিআইআরএফ) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) ওপর সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে।

মার্কিন এই প্যানেলের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিউনিস্ট-শাসিত ভিয়েতনাম ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করেছে। যে কারণে ভিয়েতনামকে ‘‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও ভারতের মতো চীনকে নিয়ে অভিন্ন উদ্বেগের কারণে ভিয়েতনামের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় ওয়াশিংটন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এশিয়া এবং অন্যান্য অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের পাল্টা হিসাবে নয়াদিল্লিকে দেখছে ওয়াশিংটন। এর ফলে ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয়গুলো উপেক্ষিত রয়ে গেছে। তবে প্যানেলের সুপারিশ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক না হওয়ায় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র-এর ওপর মার্কিন সরকারের নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা নেই।

২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের ভারত নিশানা করছে বলে অভিযোগ করেছে দেশ দুটি। এই অভিযোগ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের সম্পর্কে জটিলতা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি র-এর সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী এক নেতাকে ব্যর্থ হত্যাচেষ্টা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।

শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে মনে করে ভারত। একই সঙ্গে বিদেশে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যা চেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে দেশটি।

ইউএসসিআইআরএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ২০২৪ সালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও বৈষম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।

এতে বলা হয়েছে, গত বছরের নির্বাচনী প্রচারের সময় ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা ও ভুল তথ্য প্রচার করে। গত বছরের এপ্রিলে দেশটিতে বসবাসরত মুসলমানদের ‘‘অনুপ্রবেশকারী’’ আখ্যা দিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘‘মুসলিমরা বেশি বেশি সন্তান’’ নেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক প্রতিবেদনে গত কয়েক বছরে ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের কথা উল্লেখ করা হয়। তবে নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের এসব প্রতিবেদনকে ‘‘অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট’’ বলে অভিহিত করেছে।

২০১৪ সাল থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর বৈষম্যের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেছেন, তার সরকারের বিদ্যুৎ ও ভর্তুকির মতো প্রকল্পগুলো সকল সম্প্রদায়কে সহায়তা করে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের ওই স্বাধীন প্যানেল ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের দায়ে ভারতকে ‘‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’’ হিসাবে মনোনীত করার এবং যাদব ও র’এর বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে। তবে এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সূত্র: রয়টার্স।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *