নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল(অব:) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন”বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অন্য কোথাও নেই।এদেশের হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে যার যার ধর্মীয় উৎসব পালন করে থাকে।অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসবে অনেক বেশি পূণ্যার্থীরা অংশ নিয়েছেন।
শনিবার(৫ এপ্রিল) সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব পরিদর্শনে এসে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা,জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য যে গত শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাত ২টা থেকে শুরু হয়ে ৫ এপ্রিল রাত ১২টা ৫১ পর্যন্ত দুই দিনব্যাপী এই স্নানোৎসব উৎসব চলবে। স্নানের লগ্ন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠেছে দেশ-বিদেশ থেকে আসা লাখো পূণ্যার্থী।
এবার দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাথে সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রশাসনসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিয়মিত লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব এলাকা পরিদর্শন করে টহল দিচ্ছেন।
মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পূণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নিয়েছেন। লগ্ন শুরুর পরপরই পূণ্যার্থীর ঢল নেমেছে লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। পাপমোচনের বাসনায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পূণ্যার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠেছে লাঙ্গলবন্দ।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, মহাভারতের বর্ণনামতে পরশুরাম মুনি পাপমুক্তির জন্য ব্রহ্মপুত্র নদে যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন, তা লাঙ্গলবন্দে অবস্থিত। সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ সময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের।
লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস কর্মকার জানান” পুলিশ,আনসার সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় দেড় হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করতেছেন।এখানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত,নেপাল ও ভুটান সহ দেশ বিদেশের প্রায় ১০ লক্ষাধিক পূণ্যার্থীরা অংশ নেবেন।সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।ইতিমধ্যে স্নানোৎসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা। স্নান এলাকায় ১৯ টি স্নান ঘাটলায় কাপড় পাল্টানো, চিকিৎসা সেবায় ভ্রাম্যমান কেন্দ্র, শৌচাগার, বিশুদ্ধ পানি সরবারাহের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও স্নান এলাকায় টহলে থাকবেন সেনাবাহিনী,র্যাব, নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ড।
জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আগত পূর্ণার্থীদের সুবিধার্থে ১৬০ টি শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে। স্নান এলাকায় নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। সিসিটিভির পাশাপাশি পর্যবেক্ষণের জন্য আছে ড্রোন।