Jaijaidin

পুরোপুরি সেরে ওঠার পথ দীর্ঘ: তামিম

Shah Alam Soulav
4 Min Read

যাযাদি ডেস্ক

মারাত্মক হার্ট অ্যাটাকের পর মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন তামিম ইকবাল। সাভারের কেপিজে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর তামিমকে নেওয়া হয় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে। হার্ট অ্যাটাকের ধকল কাটিয়ে একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি। কিছুটা সুস্থ হয়ে গতকাল শুক্রবার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন। সেদিন রাতেই তিনি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে একটা দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন। ভক্তদের জানিয়েছেন পুরোপুরি সেরে উঠতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে তাকে।

শুরুতেই শুকরিয়া আদায় করে তামিম লিখেছেন, ‘আপনাদের সবার দোয়ায় ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে এখন আমি বাসায়। উথালপাথাল এই চারটি দিনে নতুন জীবন যেমন পেয়েছি, তেমনি আমার চারপাশকে আবিষ্কার করেছি নতুন করে। সেই উপলব্ধির সবটুকুতে মিশে আছে কেবল ভালোলাগা ও কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সবার ভালোবাসার ছোঁয়া ক্যারিয়ারজুড়ে নানা সময়ই পেয়েছি। তবে এবার তা অনভুব করতে পেরেছি আরও তীব্রভাবে। আমি সত্যিই আপ্লুত।’

তামিমকে হাসাপাতালে নেওয়ার প্রক্রিয়ার আগে পরে অনেকই সম্পৃক্ত ছিলেন। তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তামিম লিখেছেন, ‘বিকেএসপিতে আমার অসুস্থতার শুরু থেকেই অনেককে পাশে পেয়েছি তাৎক্ষণিকভাবে। ম্যাচ রেফারি দেবু দা (দেবব্রত পাল), বিকেএসপির চিকিৎসকরা এবং আরও যারা তখন ছিলেন, অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার যে ভাই আমাকে দ্রুতগতিতে নিয়ে গেছেন হাসপাতালে, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

তামিম আরও যোগ করে লিখেছেন, ‘আমাদের ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব কীভাবে, আমার আসলে জানা নেই। আমি পরে জেনেছি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন যে, ডালিম ভাই ওই সময় সঠিকভাবে সিপিআর না দিলে হয়তো আমাকে বাঁচানো যেত না। উপযুক্ত মানুষকে উপযুক্ত সময়ে আমার পাশে রেখে আল্লাহ আমাকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়েছেন। মোহামেডানের সাপোর্ট স্টাফ ওয়াসিমের কথা না বললেও নয়। শুরু থেকে এখনও সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়েই আছে আমার।’

এক পর্যায়ে কেপিজে হাসপাতালের ডাক্তার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুজ্জামান মারুফকে ধন্যবাদ জানিয়ে তামিম লিখেছেন, ‘কেপিজে হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার দক্ষ চিকিৎসক দল তাদের পেশাদারিত্ব আর আন্তরিকতার মিশেলে যেভাবে দ্রুততায় চিকিৎসা করেছেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকদের মান ও কার্যকারিতাই ফুটে উঠেছে তাতে। আমি পরে শুনেছি যে, দেশের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডা. মারুফ ও তার দল মিরাকল ঘটিয়েছেন। গোটা চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় কেপিজে হাসপাতালের চিকিৎসক, সেবিকা থেকে শুরু করে যারা যে কোনোভাবে যতটুকু সম্পৃক্ত ছিলেন, সবাইকে হৃদয়ে লালন করবো আজীবন। এই হাসপাতালে যতটুকু সময় ছিলাম, তাদের হৃদ্যতার পরশ অনুভব করে যাবো সবসময়।’

ঢাকার বাইরে কেপিজির মতো আরও হাসপাতাল তৈরি হলে মানুষের প্রাণ রক্ষা হবে বলে মনে করেন তামিম, ‘ঢাকা শহরের বাইরে ওই এলাকায় এতটা উঁচু মানের হাসপাতাল আছে, এতটা কুশলী চিকিৎসক দল ও স্টাফরা আছেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার এগিয়ে চলার একটি প্রমাণ এটি। দেশজুড়ে নানা জায়গায় এর কাছাকাছি মানের হাসপাতাল যদি আরও কিছু থাকে, আমার মতো আরও অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা পেতে পারে।’

একদম শেষে তামিমের জানিয়ে দিয়েছেন পুরোপুরি সেরে উঠার পথটা যে সহজ হবে না, ‘ধন্যবাদের তালিকা আসলে শেষ হওয়ার নয়। আরও অনেকেই নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, অনেকের কথা জানি, অনেকের কথা হয়তো জানি না। এতটুকু জানি, ধন্যবাদ পাওয়ার আশায় তারা কিছু করেননি। আমি তাদের ভালোবাসার ঋণে আবদ্ধ সারা জীবনের জন্য। পুরোপুরি সেরে ওঠার পথ এখনও দীর্ঘ। আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রার্থনায় রাখবেন। সবার জীবন সুন্দর ও শান্তিময় হোক। ভালোবাসা সবার জন্য।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *