Jaijaidin

নারী ফুটবলার-রেফারিরা বেতন পাননি

Shah Alam Soulav
3 Min Read

যাযাদি ডেস্ক

ঈদের আগে গতকাল (বৃহস্পতিবার) ছিল শেষ কর্মদিবস। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই ঈদের আগে কর্মীদের বেতন-বোনাস পরিশোধের প্রাণান্ত চেষ্টা করে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের প্রশাসনিক স্টাফরা বেতন বোনাস ঠিকভাবে পেলেও ফুটবল ম্যাচ পরিচালনাকারী রেফারি এবং বাফুফের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ নারী ফুটবলাররা ঈদের আগে তাদের বেতন পাননি।

ঈদের আগে প্রাপ্য সম্মানী পাননি নারী ফুটবলাররা। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৩৬ জন নারী ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি করেছিল বাফুফে। সাবিনা-কৃষ্ণারা ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারকে বিদ্রোহ করায় তারা চুক্তি করেননি। আফিদাদের পাশাপাশি বাফুফে উঠতি ফুটবলারদেরও চুক্তির আওতায় এনেছে। সেই চুক্তির এক মাস পার হলেও ঈদের আগে তারা বেতন পাননি।

বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার নারী ফুটবলারদের সম্মানী সম্পর্কে বলেন, ‘চুক্তির পরই সবাইকে (যারা নতুন) ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে বলা হয়েছিল। অনেকে অ্যাকাউন্ট করেনি এজন্য আমরা তাদের সম্মানী দিতে পারিনি। ঈদের পর সবাইকে একসঙ্গে দেওয়া হবে। তাদের জন্য আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা আগে থেকেই প্রস্তত রয়েছে।’

সাধারণ সম্পাদক উঠতি ফুটবলারদের ওপর দায় চাপালেও ফেডারেশনেরও সদিচ্ছার অভাব স্পষ্ট। বাফুফে ভবন ব্যাংক-বাণিজ্য পাড়া মতিঝিলেই। নারী ফুটবলাররা বাফুফে ভবনেই থাকেন। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের স্পন্সর ঢাকা ব্যাংক। খুব সহজেই অতি স্বল্প সময়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব।

সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী দলকে বাফুফে দেড় কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। সেই পুরস্কারের অর্থ ফেডারেশন কর্তাদেরই দেওয়ার কথা। সাড়ে চার মাস পেরিয়ে গেলেও ফেডারেশন কর্তারা সেটা যেন ভুলেই গেছেন।

এদিকে, রেফারিদের সম্মানী বকেয়া বাংলাদেশের ফুটবলের পুরনো সংস্কৃতি। তাবিথ আউয়ালের নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার সময় রেফারিদের বকেয়া ছিল কোটি টাকার ওপর। পুরনো বোঝা ধীরে ধীরে কমানোর প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি চলমান বিলগুলো দ্রুত পরিশোধের অঙ্গীকার ছিল। চলতি মৌসুম অর্ধেকের বেশি শেষ হলেও রেফারিরা মাত্র লীগের পাঁচ রাউন্ডের সম্মানী পেয়েছেন গত মাসের শেষ দিকে।

রেফারিরা ঈদের আগে লিগে অন্তত প্রথম লেগের বাকি চার ম্যাচের সম্মানী প্রত্যাশা করেছিলেন। ফেডারেশন রেফারিদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হয়ে একাধিক রেফারি বলেন,‘প্রথম লেগ শেষ হয়েছে এক মাসের বেশি। আমাদের সেই অর্থ ঈদের আগে দেয়নি শুনেছি তারা নাকি স্পন্সর থেকে অর্থ পায়নি। আমরা ফেডারেশনের কাছে অনেক টাকা পাওনা। ঈদের আগে অন্তত আমাদের কিছু দেয়া উচিত ছিল। ’ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার ঈদের পর পুনরায় লিগ শুরু হওয়ার আগে রেফারিদের সম্মানী দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন।

ফুটবলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ রেফারিং। বাফুফের নতুন কমিটি রেফারি নিয়ে তেমন কোনো ভাবনা দৃশ্যমান নয়। চলতি মৌসুমের অর্ধেক শেষ হলেও এখনো বাফুফে রেফারিজ কমিটিই করতে পারেনি। নির্বাচনের পাঁচ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর ২০ মার্চ নির্বাহী সভায় রেফারিজ কমিটি গঠন নিয়ে আলোচ্যসূচি থাকলেও ইফতারের আগে সময়স্বল্পতা আর এটি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। রেফারিজ কমিটির চেয়ারম্যান না থাকায় রেফারিদের প্রকৃত অভিভাবকও যেন নেই।

তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বে নতুন কমিটি আসার পরপরই সম্মানী বৃদ্ধির দাবিতে রেফারিরা চিঠি দিয়েছিলেন। সেই চিঠি নির্বাহী কমিটির সভায় আলোচনার ভিত্তিতে সম্মানী বাড়ানোর পাশাপাশি ফুটবলার তৈরির মতো রেফারি তৈরির জন্য একাডেমির সিদ্ধান্ত হয়। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সেই একাডেমির কোনো কার্যক্রম দৃশ্যত হয়নি।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *