Jaijaidin

ড্রোন হামলা ঠেকাতে মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তি আনছে যুক্তরাষ্ট্র

Shah Alam Soulav
3 Min Read

যাযাদি ডেস্ক

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মারাত্মক যে অস্ত্রটির ব্যবহার পাকাপোক্ত হয়েছে, তা হলো সামরিক ড্রোন। ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনায় রাশিয়ার বিধ্বংসী ড্রোনের ঝাঁক বেঁধে আক্রমণ অনেকদিনই সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে।

পশ্চিমা শিবিরের দাবি, রাশিয়া ওইসব ড্রোন পেয়েছে ইরানের কাছ থেকে। ইরানও নিজেদের বিশেষ দিবসগুলোতে শক্তিশালী সব ড্রোন দেখিয়েছে।

সম্প্রতি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ঠেকাতে মধ্যপ্রাচ্য সংলগ্ন সাগরে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক সামরিক প্রস্তুতি নিয়েছে। দেশটি কমপক্ষে ছয়টি দূরপাল্লার ‘স্টিলথ বি-টু স্পিরিট’ বোমারু বিমান ভারত মহাসাগরের ব্রিটিশ দ্বীপ ডিয়েগো গার্সিয়ায় পাঠিয়েছে। দেশটির দাবি, ইরানকে তার কথিত পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি বাতিল করতে হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে কথিত প্রক্সি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে হবে।

কিন্তু মার্কিন ঔদ্ধত্যের কাছে ইরান মাথা নত করবে না। এখন ইরান যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে দেশটি তার ড্রোনের পরাক্রম নিজেই দেখাবে। সম্ভবত বিষয়টি মাথায় রেখেই নতুন এক অস্ত্র ডিজাইন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৫ সালের মার্চের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য খবর হল, ক্যালিফোর্নিয়ার টরেন্সে অবস্থিত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি স্টার্ট-আপ এপিরাস ইনকর্পোরেটেড একটি উচ্চ-শক্তির মাইক্রোওয়েভ অস্ত্র উন্মোচন করেছে। এটির সাহায্যে চালকবিহীন আকাশযান অর্থাৎ ইউএভি ঝাঁককে একবারে ধ্বংস করা যায়। এর নাম দেওয়া হয়েছে লিওনিডাস সিস্টেম।

হাই পাওয়ার মাইক্রোওয়েভ (এইচপিএম) অস্ত্র অনেকটা এক ঢিলে অনেকগুলো পাখি মেরে ফেলার মতো কাজ করে। একটি সিস্টেম দিয়ে বিশাল এলাকাজুড়ে ধেয়ে আসা ড্রোনের ঝাঁককে অচল করার জন্য ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালস ছোড়া হয়। ড্রোন আক্রমণ মোকাবেলায় অস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভালো সহায় হতে পারে।

আধুনিক যুদ্ধে ড্রোন হামলা প্রতিপক্ষের জন্য ভয়াবহ বিপদ হয়ে উঠেছে। বর্তমান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিমান-বিধ্বংসী অস্ত্রগুলো দিয়ে অত্যাধুনিক অথচ সস্তা এই অস্ত্রকে দমানো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। ডিরেক্টেড এনার্জি টেকনোলজির সাহায্যে লিওনিডাস সিস্টেম এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে।

সিস্টেমটির নামকরণও বেশ রাজনৈতিক। প্রাচীন গ্রিসের স্পার্টান রাজা কিংবদন্তি লিওনাইডাসের নামে এর নাম রাখা হয়েছে। পারস্যের রাজা জার্ক্সিসের বিরুদ্ধে তার প্রতিরোধ ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে।

লিওনাইডাসের মতো এইচপিএম সিস্টেম ৩০০ মেগাহার্টজ থেকে ৩০০ গিগাহার্টজ পর্যন্ত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ তৈরি করে। এই তীব্র শক্তির মাইক্রোওয়েভ ড্রোনে থাকা ইলেকট্রনিক সার্কিটকে পুড়িয়ে অচল করে দিতে পারে। বড় এলাকাজুড়ে শক্তিশালী তাণ্ডব চালাতে সক্ষম এই অস্ত্র একসঙ্গে কয়েক ডজন বা কয়েকশ’ ড্রোন এক ধাক্কায় বিকল করে দিতে পারে।

আগেকার এইচপিএম সিস্টেমগুলি ভ্যাকুয়াম টিউব প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় ভারী আর ভঙ্গুর ছিলো। কিন্তু সলিড-স্টেট ইলেকট্রনিক্সের সাম্প্রতিক উন্নতির ফলে লিওনিডাসের মতো সিস্টেম মাইক্রোওয়েভ তৈরিতে সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস ব্যবহার করে। ফলে এটি তুলনামূলক টেকসই, ছোট আর ব্যবহার করার জন্য সহজ প্রযুক্তি হয়ে উঠেছে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *