যাযাদিপ্র রিপোর্ট
জাতীয় পার্টির বহিস্কৃত কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ ও তার ছেলে কাজী সোয়েব রশিদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ একশ’ কোটি টাকার মানহানীর মামলা দায়ের করেছেন রিফাতুজ্জামান। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রিফাতুজ্জামান নামের এক ভ’ক্তভোগী ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অপর দুই আসামী হচ্ছেন, ফখরুল আহসান শাহাজাদা ও মিজান ওরফে কাইল্যা মিজান। তদন্ত করে আগামি ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে পিবিআিইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহারে বাদি দাবি করেছেন, ‘ তার বিরুদ্ধে বেসরকারী একটি টেলিভিশন চ্যানেলে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছেন আসামীরা। আসামীদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ছবি ও ভয়েস এডিট করে বিকৃত সংবাদ প্রচার করিয়েছেন আসামীরা। এতে করে সামাজিকভাবে তার সম্মান মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। আসামীরা পরস্পর যোগসাজোশে তার মান সম্মান ক্ষুন্ন করতেই এমন অপপ্রয়াস চালিয়েছেন’।
বাদির দাবি, মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের পর আসামীদের কাছে ফোন করে তাদের বিরুদ্ধে কেন অসত্য মিথ্যা বানোয়াট গল্প বানিয়ে সংবাদ আকারে প্রকাশ করা হলো তা জানতে চেয়েছিলাম। এ সময় ৩ ও ৪ নম্বর আসামী যথাক্রমে ফখরুল আহসান শাহাজাদা ও মিজান ওরফে কাইল্যা মিজান কৌশলে বিষয়টি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপর চাপিয়ে দেয়। তারা তাকে জানায়, সিআইডি এমন খবর প্রচার করিয়েছে। আরও রিপোর্ট প্রকাশিত হবে। রিপোর্ট থামাতে তার কাছে আসামীরা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। না দিলে বিভিন্ন মিডিয়ায় আরো সংবাদ প্রচার করানো হবে বলে হুমকি দেয়।
বাদি জানান, পরবর্তীতে আমি সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ করি। সিআইডি এ ধরনের কোন তথ্য প্রচার করায়নি বলে কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়। আসামীরা পতিত হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ট সহযোগী। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ছাত্র জনতার ওপর গুলিবর্ষণও করে। কাজী ফিরোজ রশিদ ও তার ছেলে কাজী সোয়েব রশিদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতা নিহতের ঘটনায় দায়েরকৃত একাধিক হত্যা মামলার আসামী। কাজী সোয়েব রশিদ হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রচার করায়। প্রসঙ্গত, কাজী ফিরোজ রশিদের পিতা কাজী মোজাফফর হোসেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ফিরোজ রশিদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদ্যাবধি যোগাযোগ আছে। তিনি গোপনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত শেখ হাসিনার হয়ে কাজী সোয়েব রশিদ ছাত্রদের উপর বৃষ্টির মত গুলি চালিয়ে ছাত্র হত্যা করেছে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর নিজের খোলস বদলে ছাত্রদের পাশে অবস্থান নেয়। হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে। যাতে করে ছাত্র-জনতার তার অতীত কর্মকাণ্ড ভ’লে যায়।