সিনিয়র সাংবাদিক ও সম্পাদক শফিক রেহমান বলেছেন, আমরা আশাকরি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দেশে ফিরে এসে বিএনপিকে আবার নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করবে। এবং বিজয়ী লাভ করেবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন ।
তিনি বলেন, প্রথমে গভীর শ্রদ্ধা জানাই গত বছর জুলাই আগষ্টের আন্দোলনের দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের যারা শহীদ হয়েছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই তাদের সবার প্রতি। কেননা, তাদের আত্মত্যাগের কারনে আমি ৭ বছর নির্বাসিত থাকার পর স্বদেশে ফিরেছি এবং আজ আপনাদের সাথে মিলিত হয়ে কথা বলতে পারছি ।
লালগোলাপ খ্যাত শফিক রেহামন বলেন, মনে রাখতে হবে জুলাই আগষ্টের আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল প্রায় ১৫ বছর জুড়ে। এই ক্ষেত্র প্রস্তত করেছিল প্রধানত বিএনপি। বিএনপির বহু নেতাকর্মী ১৫ বছর ধরে নির্বাসিত হয়েছেন। জেল খেটেছেন। অন্যায় দমন পীড়ন হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ফাঁসিতে ঝুলতে হয়েছে। আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হয়েছেন রাতের পর রাত। বিএনপির এই দেড় দশকের আন্দোলনের শেষ অংশে দেশজুড়ে ১১ টি বিশাল গণসমাবেশ করেছে। বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতের নেতাকর্মীরা নির্যাতনে শিকার হয়েছে। এই আন্দোলনে ঢাকায় শাপলা চত্ত্বরেও হেফাজতের অনেক নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন অনেকেই। তবে, একটি কথা মনে রাখতে হবে এই আন্দোলন ছিল অহিংস শান্তিপূর্ন ও সংযত। তাই আজ বিএনপির ১১ টি সমাবেশ ও আন্দোলন নিয়ে মুক্ত কন্ঠে প্রসংশা করতে চাই। শান্তির ভাষা হতে পারে সকল প্রতিবাদের ভাষা। আর এসবের পেছনে অনুপ্রেরনা যুগিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
‘‘কাতারের আমিরের রাজকীয় বহরের বিমানে লন্ডনে যাচ্ছেন খালেদা” একটি পত্রিকার হেডলাইন দেখিয়ে তিনি বলেন, মাত্র আট অক্ষরের এই হিডিংয়ে সাম্প্রতিক ইতিহাস সম্পূর্নভাবে ধরা পরেছে। এই চমৎকার হিডিংয়ে উঠে এসেছে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে আওয়ামী নেত্রী শেখ হাসিনা, তিনি মনে করেন বাংলাদেশে প্রধান।কিন্তু না। আপনি বাংলাদেশেরে সবচেয়ে ঘৃৃনিত ব্যক্তি। শুধু আপনি নন। আপনার পরিবারের সবাই। বিবেচনা করুন দুই নেত্রীর মধ্যে কত আকাশ পাতাল তফাৎ। হাসিনা প্রথমে পাঁচ বছর পরে টানা ১৫ বছর ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও পর গত ৫ আগষ্ট একটি মালবাহী বিমানে পালিয়ে যান। আর খালেদা জিয়া সেদিন গেলেন প্রকাশ্যে লণ্ডনে চিকিৎসার জন্য। আর হাসিনাকে বিদায় দেওয়ার জন্য একজন ব্যক্তিও ছিলেন না। খালেদা জিয়ার লন্ডনে যাওয়ার দিন গুলশান বিমানবন্দরের রান্তার দুপাশে লাখো জনতা ঢল নামে। রাজধানীর সব রাস্তা ছিল চাকা ব্লক ও ট্রাফিক জ্যাম। মানুষের এই ভালবাসা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। আমি র্নিদিধায় বলে দিতে চাই খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম মহিলা বীরশ্রেষ্ঠ। এই সম্মান অর্জন তাকে করতে হয়েছে অনেক কষ্ট ও ত্যাগের মাধ্যমে। তাই তার মধ্যে সম্মান দেশে ও বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনাকে বাধ্য হয়ে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। তিনি লন্ডনের যেতে চাইলেও যেতে পারেন না। কারন সরকার আগ্রহ দেখায়নি। আর খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন। আমেরিকাও যেতে পারেন। কিন্ত শেখ হাসিনাকে আমেরিকাও নিতে চায়নি । কারন সেখানে তার কুকুর প্রেমী পুত্র সন্তান মামলায় জড়িত। আমরা এটাও জানি ব্রিটেনে হাসিনার বোন রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। টিউলিপ সেখানে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সদস্য হওয়া সত্বে তিনি অভিযুক্ত হয়েছেন। একজন মন্ত্রী হওয়ার পর চায়নাতেও যেতে দেওয়া হয়নি। শেখ পরিবারের দূর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশ বিদেশে। আর খালেদা জিয়ার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা ব্রিটেনসহ ইসলামী দেশগুলোতে। শেখ হাসিনার পরিবারের এই দূর্নাম একদিনে নয় ৩২ বছর ধরে ছড়িয়েছে।
শফিক রেহমান বলেন, খালেদা জিয়াকে ইসলামী দেশগুলো অনেক সম্মান করে। তার প্রমান মেলে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যেতে এয়ার এ্যম্বুলেন্স দিয়েছে কাতার আমির। এজন্য তাকে অনেক ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে। তার একমাত্র পুত্র তারেক রহমানকেও কাছে পাননি বহুবছর। এমনকী স্বামীর স্মৃতিবিজরিত বাড়ি থেকে তাকে বিতারিত করা হয়েছে। কিন্ত সবকিছুর শেষ আছে। যার শেষ হয়েছে ৫ আগষ্টের আন্দোলনে। আর দূর প্রবাসে থেকে বিএনপিকে সংগঠিত করেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমরা আশাকরি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দশে ফিরে এসে বিএনপিকে আবার নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করবে। এবং বিজয়ী লাভ করবে।