বিশেষ প্রতিনিধি
ক্রসরোডে ক্রসফায়ার মধ্যে পড়েছে বাংলাদেশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
রবিবার ৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রজন্ম একাডেমি ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলাল বলেন, আমাদের মরহুম প্রখ্যাত নাট্যকার আব্দুল্লাহ আল মামুন একটা নাটক লিখেছিলেন নাটকটার নাম ছিল ক্রস রোডে ক্রসফায়ার। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা এই ক্রসরোডে ক্রসফায়ার মধ্যে পড়েছে বলে আমার মনে হয়। কারণ শিশু হাতে নতুন খেলনা দিলে তারা এটা ভাঙতেও পারে আবার কাঁদতেও পারে কিন্তু নতুন করে তৈরি করতে পারে না জোড়া লাগাতে পারেনা তেমন একটা অবস্থার মধ্যে দিয়ে আজকের সরকার পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা অনেকবার বলেছি যারা এই দেশটাকে পরিচালনা করেছে। যাদের দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। যেসব রাজনীতিবিদরা অভিজ্ঞ তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেন। এ সরকার পরামর্শ নেন নাই। পরামর্শ নেওয়ার আগ্রহ তাদের দেখিনি। আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে সেই বৈঠকের মধ্যে কি হয়েছে তা তারা একেক সময় এক এক রূপে জাতির সামনে উত্থাপন করেছে।
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আজ বাংলাদেশের যে অবস্থা এই অবস্থায় মানুষের সবচাইতে বড় কষ্টের বিষয় সেটা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য। সারা পৃথিবীর সম্মানিত ব্যক্তি ডঃ ইউনুস আমরা তাকে সম্মান করি তিনি সরকারের প্রধান অথচ এই সরকারের কাছে কোন খবর নাই যে সারা পৃথিবীতে সয়াবিন তেলের দাম ব্যাপক হারে কমেছে। অথচ এই দেশে সয়াবিন তেল গায়েব হয়ে গেছে। রমজান সামনে এসে গেছে। মানুষ হাহাকার করছে। মানুষ পকেটে যে টাকা নিয়ে বাজারে যায় সেই টাকা দিয়ে চাহিদা মত দ্রব্যমূল্য কিনতে পারেনা। মধ্যবিত্ত মানুষের এই যন্ত্রণা কষ্ট এটা এই সরকার বুঝে বলে আমার মনে হয় না। এবং মধ্যবিত্তদের মধ্যে যে হতাশা তৈরি হয়েছে সেই হতাশার মধ্য থেকেই উঁকি দিচ্ছে পালিয়ে যাওয়া সরকার।পালিয়ে যাওয়া হাসিনা।
ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দাদাদের দরকার নাই। আপনারা নিজেদের দেশে দাদাগিরি করুন। পারলে চীনের সাথে দাদাগিরি করুন। বাংলাদেশের দাদাগিরি করার জন্য আপনাদের কোন নাক ঢুকতে দেওয়া হবে না। আপনাদের কোন হাত ঢুকতে দেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, আপনারা রাজনীতিবিদদের পছন্দ করেন না ঠিক আছে। কিন্তু এই দেশে অনেক বিশ্লেষক আছে যারা দেশ নিয়ে বিশ্লেষণ করে যারা দেশপ্রেমিক তাদের সাথে পরামর্শ করে। দ্রব্যমূল্য ঠিক করেন । আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করেন।
সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এখনও কিভাবে আওয়ামী লীগ ফানা তোলে? এখনো কিভাবে স্বেচ্ছাসেবক দল যুবদলের নেতাদেরকে গুলি করা তারা। আমরা যদি এর পাল্টা অ্যাকশনে যাই তাহলে কিন্তু সরকারের অস্তিত্ব থাকবে না। আমরা এ সরকারকে সমর্থন করি। এবং সমর্থন করে যাব। কিন্তু তারও তো একটা সীমা আছে। মানুষের সমর্থন আমাদের আছে। গত ১৭ বছর জিয়াউর রহমানের পরিবার বিএনপি পরিবার যত নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তারপরও যারা আমাদের পাশে থেকেছে তাদেরকেও তো আমরা হতাশ করতে পারি না। একটা গুষ্টিকে বাদ দিতে পারেন। তবে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সাথে বিএনপি আছে এবং থাকবে।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য চন্দ্র রায়, প্রজন্ম একাডেমীর সভাপতি কালাম ফয়েজী, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহিন সহ প্রমুখ।