নিজস্ব প্রতিবেদক
অত্যাবশকীয় কৃষি ও শিল্প-কারখানার ব্যবহৃত যন্ত্র ও যন্ত্রাংশের সব পর্যায়ে আরোপিত বর্ধিত মূল্যসংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যমূলক কর বৃদ্ধি প্রতিরোধ কমিটি। অবিলম্বে বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার না হলে আন্দোলনে যাবার ঘোষাণা দিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক সহিদুল হক মোল্লা বলেন, অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তী সরকারের নির্দেশক্রমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত ডিজেল ইঞ্জিন মোটরপাম্প, অগভীর ও গভীর পাম্প (সাবমারসিবল পাম্প) শিল্প-কলকারখানার ব্যবহৃত মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশের ওপর কর ও ভ্যাট বৃদ্ধি করায় আমরা ব্যবসায়ীরা এবং কৃষক সমাজ হতাশ ও উদ্বিগ্ন। সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কোনও ধরনের আলাপ-আলোচনা ছাড়াই গত ৯ জানুয়ারি এই কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত গেজেট নোটিফিকেশন করা হয়েছে।
সরকার কর ও ভ্যাট ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করায় ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ক্রেতা সাধারণও পণ্য কিনতে আগ্রহ হারিয়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে হলে কর-ভ্যাট সহনীয় পর্যায়ে রাখা একান্ত জরুরি। কর হার বৃদ্ধি হলে কর ফাঁকির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এর সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করে আমলাতন্ত্র। সাধারণ জনগণের কোনও উপকার হয় না। বাংলাদেশের বাস্তবতায় সুনাগরিক ও সুশিক্ষিত জনসম্পদ গড়ে তোলা না গেলে শুধু করের হার বৃদ্ধি করলেই রাষ্ট্র তার সুফল পাবে না।
ভ্যাট বৃদ্ধির পেছনে আইএমএফের হাত থাকতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ধারণা বিশ্বব্যাংক- আইএমএফের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার কৃষিপণ্য উৎপাদনের মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি এবং শিল্প-কলকারখানার ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ও হার্ডওয়ার মেশিনারিজের ওপর ৫ শতাংশের বদলে ৭.৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বৃদ্ধির জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। যা মরার ওপর খাড়ার ঘা এর মতো প্রভাব পড়তে শুরু করছে। খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে বিক্রির ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট বহাল রেখে পুনরায় প্রজ্ঞাপন জারি করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা ভ্যাট বিরোধী নই. আমরা ভ্যাটের বর্তমান পদ্ধতির বিরোধী। আমরা সরকারের সহায়ক হতে চাই। ভ্যাটের নামে আমাদের উপর জুলম চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আজকে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে, যারা আন্দোলন করছে তাদের দাবী মেনে নেয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ভদ্র বলে তাদের দাবী মানা হচ্ছে না। এনবিআর চেয়ারম্যান বার বার আশ্বাষ দেয়ার পরও তা বাস্তবায়ন হচ্চে না।
তিনি বলেন, আশা করছি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমাদের যৌক্তিক দাবী বাস্তবায়ন করা হবে। না হলে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন করা হবে। আমাদের সব ব্যবসায়ীদের উল্লিখিত যৌক্তিক দাবি অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন না হলে সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্য সচিব শহীদুল হক শহীদ, যুগ্ম সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম স্বপন, ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিনসহ ৩৫ টি ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
Nicely put, Thanks.