Jaijaidin

এনটিভিতে মমতাজ হারবাল প্রোডাক্টস ‘সিক্রেট বিউটি এক্সপার্টে’র প্রথম আসরের সেরা পরশিয়া

Shah Alam Soulav
4 Min Read

যাযাদি ডেস্ক

সাভারের শিরিন আক্তার, পোস্তগোলার আয়েশা আক্তার হাসি, বাসাবোর পারুল হাসান, মগবাজেরর পরশিয়া সুলতানা লাকি, মুন্সীগঞ্জের ফাতেহা আক্তার, জুরাইনের যুতি আক্তার কান্তা— সবাই যেমন রোমাঞ্চিত, তেমনি বেশ চিন্তিত। প্রায় ২০০ জনকে পেছেনে ফেলে একাধিক বাছাই প্রক্রিয়া শেষে আজ শনিবার (২৯ মার্চ) তাঁরা সবাই রাজধানীর তেজগাঁওয়ের এনটিভি স্টুডিওতে সৌন্দর্যের উৎসবের মঞ্চে।

সৌন্দর্যের পেছনের কারিগরদের খুঁজে বের করতে দেশের শীর্ষস্থানীয় টিভি চ্যানেল এনটিভি ও মমতাজ হারবাল প্রোডাক্টস প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে রিয়েলিটি শো মমতাজ হারবাল প্রোডাক্টস প্রেজেন্টস ‘সিক্রেট বিউটি এক্সপার্ট’। সেই আয়োজনে ১২ পর্ব শেষ করে গ্রান্ড ফিনালের মঞ্চে দাঁড়িয়ে রোমাঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি চিন্তিত থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ এমন টিভি আয়োজনে এটিই প্রথম অংশগ্রহণ সবার।

এই যেমন সাভারের শিরিন বলছিলেন, খুলনায় বাবা বাড়িতে শিখেছেন মেকাআপের কাজ, ৫ বছর কাজ করছেন। নিজের আগ্রহ থেকেই এমন আয়োজনে অংশ নিয়েছেন।
বাসাবোর পারুল এক নিকট আত্মীয়কে হারিয়ে আজ এই পেশায়। রিয়েলিটি শো টিভিতে প্রচুর দেখেছেন, এবারই প্রথম নিজে অংশ নিয়েছেন। গ্রান্ড ফিনালের ৬ প্রতিযোগীই এনটিভি বা মমতাজ হারবাল প্রোডাক্টসের কর্মীর মাধ্যমে এমন আয়োজনের কথা জেনেছেন, এরপর আগ্রহের বশে অংশ নিয়েছেন। পুরো শোটি উপস্থাপনার দায়িত্ব সামলেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আয়েশা খান।

‘সিক্রেট বিউটি এক্সপার্ট’ প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন দেশের প্রখ্যাত বিউটি এক্সপার্ট ও পারসোনার ম্যানেজিং ডিরেক্টর কানিজ আলমাস খান এবং হেয়ার এক্সপার্ট বান-থাই ও বারবার বিউটি সেলুনের কর্ণধার কাজী কামরুল ইসলাম। এ ছাড়া প্রতি পর্বে বিভিন্ন সেক্টরের একজন তারকা শিল্পী অতিথি বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকেন। গ্রান্ড ফিনালেতে সেই আসনে বসেছেন চিত্রনায়িকা শবনম বুবলি।

প্রতি পর্বে ফেসিয়াল ট্রিটমেন্ট, ব্রাইডাল মেকআপ, হেয়ারস্টাইলিং ও ক্রিয়েটিভ বিউটি রাউন্ডে দক্ষতা দেখিয়ে গ্রান্ড ফিনালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মগবাজারের পরশিয়া সুলতানা লাকি। দ্বিতীয় হয়েছেন বাসাবোর পারুল হাসান, আর তৃতীয় হয়েছেন সাভারের শিরিন আক্তার। চূড়ান্ত রাউন্ডে তাঁদের তৈরি করা কালচারাল ফিউশন থিমের মেকআপ ও হেয়ার ডিজাইন দর্শক-বিচারকদের মুগ্ধ করে।

চ্যাম্পিয়ন পরশিয়া সুলতানা লাকির ভাষ্য, ‘এমন একটি আয়োজনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আমি কি বলব বুঝে উঠতে পারছি না। আমি নিজে আজ শিখে গেলাম, সত্যিকারের সৌন্দর্য তৈরি হয় হাতের নিপুণতায়, রূপসজ্জার প্রোডাক্টে নয়। এই শো থেকে আমি নতুন অনেক কিছু শিখেছি, যা আমার বাস্তব জীবনে কাজে আসবে।’

পারুল হাসান ও শিরিন আক্তারও বেশ উচ্ছ্বসিত। দুজনই বলছিলেন, ‘কানিজ আলমাস খান ম্যাম ও কামরুল ইসলাম স্যারের সঙ্গে অনেকদিন একসাথে ছিলাম। তাঁদের কাছ শেখাটা বিরাট অর্জন। ভবিষ্যতে আমরা এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাব।’

মমতাজ হারবাল প্রোডাক্টস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রতিযোগী যথাক্রমে ১ লাখ, ৫০ হাজার ও ৩০ হাজার টাকার উপহার পাবেন।

মমতাজ হারবালের সিওও আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘এমন লুকিয়ে থাকা হাজারো প্রতিভাকে আমরা এই প্ল্যাটফর্মে এনেছি। বিজয়ী ছাড়াও বাকি ফাইনালিস্টরা আমাদের মেন্টরশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এই শিল্পে প্রতিষ্ঠিত হবেন।’

শোটির প্রযোজক মোহাম্মদ নুরুজ্জামানের ভাষ্য, ‘এনটিভির এই শো শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি বাংলাদেশের বিউটি ইন্ডাস্ট্রিকে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মে নেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। এখানে পাওয়া প্রতিভারা দেশের নাম উজ্জ্বল করবেন বলে আশা করছি।’

বিচারক কানিজ আলমাস খান বলেন, ‘আমি আজ অবাক! এরা প্রমাণ করেছেন, বাংলাদেশে প্রতিভার কোনো অভাব নেই। তাঁদের টেকনিক্যাল স্কিল আর আর্টিস্টিক ভিশন দারুণ।’
কাজী কামরুল ইসলামের মতে, ‘গ্রামের একজন বিউটিশিয়ানও যে শহরের বিউটিশিয়ানকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন, এই শো তার প্রমাণ।’

এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিউটি ইন্ডাস্ট্রিতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *