Jaijaidin

আয়নাঘরেই রাখা হয়েছিল, চিনতে পারলেন আসিফ ও নাহিদ

Shah Alam Soulav
3 Min Read

যাযাদিপ্র ডেস্ক

জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের গোপন টর্চারসেলে (আয়নাঘর) আটকে রাখা হয়েছিল।

বুধবার (ফেব্রুয়ারি ১২) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আয়নাঘর পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) টর্চার সেলের যেসব কক্ষে তাদের আটকে রাখা হয়েছিল তা দেখে চিনতে পারার কথা জানান আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলাম।

আয়নাঘর পরিদর্শনের পর নাহিদ জানান, তাকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল সেই কক্ষের একপাশে টয়লেট হিসেবে একটি বেসিনের মতো ছিল। ৫ আগস্টের পর এই সেলগুলোর মাঝের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়, দেয়াল রং করা হয়।

আসিফ মাহমুদ জানান, তিনি দেয়াল দেখে কক্ষটিকে চিনতে পেরেছেন। কক্ষটি আগে অনেক ছোট ছিল, এখন মাঝের দেয়াল ভেঙে বড় করা হয়েছে। ওই কক্ষে তাকে চারদিন আটকে রাখা হয়েছিল। এসময় বাইরের কারও সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। টয়লেট ছিল কক্ষের বাইরে এবং তাকে চোখ বেঁধে টয়লেটে নিয়ে যাওয়া হতো।

বুধবার (ফেব্রুয়ারি ১২) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজধানীর কচুক্ষেত, উত্তরা, আগারগাঁও এলাকায় বিগত সরকারের তিনটি গোপন কারাগার পরিদর্শন করেন। বিগত বছরগুলোতে শেখ হাসিনার সরকার ভিন্ন মতের মানুষকে বিচার বহির্ভূতভাবে এসব গোপন বন্দীশালায় আটকে রাখে এবং নির্যাতন করে। গোপন এসব কারাগার ভুক্তভোগীসহ দেশবাসীর কাছে আয়নাঘর নামে পরিচিত।

আয়নাঘরে খাঁচার মতো জায়গায় যেখানে বন্দিদের আটকে রাখা হতো সেসব জায়গা ঘুরে দেখেন প্রধান উপদেষ্টা। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের একটা নমুনা প্রতিষ্ঠা করে গেছে।

তিনি বলেন, আমাকে নতুন করে বলতে হবে না। বর্ণনা দিতে গেলে বলতে হয়—আয়নাঘরের ভেতরে খুবই বীভৎস দৃশ্য। এখানে মনুষ্যত্ববোধের কিছু নেই। যা হয়েছে তা নৃশংস।

ড. ইউনূস বলেন, এটা কি আমাদেরই সমাজ? এটার কোনো ব্যাখ্যা নাই। যতটাই শুনি, অবিশ্বাস্য মনে হয়। যারা নিগৃহীত হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছে তারাও আমাদের সঙ্গে এসেছেন, তাদের মুখেই শুনলাম। বিনা দোষে কত সাক্ষী নিয়ে, হাতে এক্সপ্লোসিভ ধরিয়ে দিয়ে কাউকে সন্ত্রাসী-জঙ্গি বলে রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের বিনা কারণে, বিনা দোষে উঠিয়ে আনা হতো। সন্ত্রাসী, জঙ্গি বলে এখানে ঢুকিয়ে রাখা হতো।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই রকম টর্চার সেল (নির্যাতনকেন্দ্র) সারা দেশে জুড়ে আছে। ধারণা ছিল এখানে কয়েকটা আছে। এখন শুনছি বিভিন্ন ভার্সনে (সংস্করণে) সারা দেশ জুড়ে আছে। সংখ্যাও নিরূপণ করা যায়নি।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *