চেয়ারম্যান, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান বলেছেন, ইনডিয়া সরকার একতরফাভাবে তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় বাংলাদেশ অংশে তিস্তা এখন ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। এ কারণে লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী জেলার ১২৫ কিলোমিটার তিস্তার অববাহিকায় জীবনযাত্রা, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দেশের অন্যতম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ অকার্যকর হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে পানির সংকটে পড়ছে বাংলাদেশ। তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ইনডিয়া একতরফাভাবে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে পানি নিয়ে নিচ্ছে। ইনডিয়া গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তার পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু তিস্তার পানি আমাদেরও লাগবে।
এখন গজলডোবা বাঁধের নিচ দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে কিছু পানি আসছে। এটা একেবারে অপ্রতুল। তিস্তার পানির জন্য আমার উদ্যোগে লং মার্চ করা হয়। তখন দেশ-বিদেশের প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ মানুষ একটা চরের মধ্যে জমায়েত হন।
১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। ১৯৯০ সালে কাজী জাকারিয়াকে চেয়ারম্যান এবং আমাকে মহাসচিব করে ‘আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি’ গঠন করা হয়। তখন থেকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আমরা ফারাক্কা বাঁধের কারণে জীববৈচিত্র্যসহ ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরতে শুরু করি। ইনডিয়ার আন্তঃনদী সংযোগ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আমার নেতৃত্বে লং মার্চ হয়। বিশ্বে ইনডিয়ার আন্তঃনদী সংযোগ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে ওঠে। এত বড় জমায়েত বিশ্বে উদাহরণ।
১৯৯৬ সালে ইনডিয়ার সঙ্গে তিস্তার ন্যায্য পানির জন্য ৩০ বছরমেয়াদি চুক্তি করা হয়। সে সময় ইনডিয়ার ú্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। এই চুক্তির মেয়াদ আগামী ২০২৬ সালে শেষ হবে। এটা ছিল অসম, অন্যায় ও বৈষম্যমূলক চুক্তি। এতে উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। অর্থনীতি ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে।
এখনই সময় আমাদের জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গ্যারান্টি ক্লজসহ নতুন চুক্তি করার কোনো বিকল্প নেই। বহুপক্ষীয় সমস্যার সমাধান দ্বিপক্ষীয়ভাবে কখনো হতে পারে না। কারণ এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে চায়না, ইনডিয়া, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ। তিস্তা চুক্তি নিয়ে এই দেশগুলোর নেতাদের একসঙ্গে বসতে হবে।