বিশেষ প্রতিনিধি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি, অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে কিচেন কেবিনেট আছে। তারা সরকার প্রধানের কান ভারী করেন এবং উন্নয়নমূলক কোন সিদ্ধান্ত নিতে দেন না।
বুধবার ৫ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “নন এমপিও শিক্ষক ঐক্য পরিষদ”এর লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এই নন এমপিও শিক্ষকরা পেটের ক্ষুধা নিবৃত্তের জন্য যে দাবি তুলেছে এই দাবির প্রতি নূন্যতম কোন কর্নপকরেননি সরকারের পক্ষ থেকে। এটাতো আবু সাইদের রক্ত ঝড়া সরকার, মুগ্ধের রক্ত ঝড়া সরকার, এটাতো আহনাফের রক্ত ঝড়া সরকার। তো সেই সরকার, আজকে যারা সমাজের মেরুদণ্ড, সমাজকে যারা নির্মান করবেন, ছাত্রদেরকে যারা গড়ে তুলবেন তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাদের আহারের জন্য, খাদ্যের জন্য, কোন রকমে মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য আজকে তারা দাবি করছেন। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরনের নজর নেই। নন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা যারা গত বিশ বছর, পচিশ বছর, ত্রিশ বছর ধরে তারা একটি টাকাও পায়নি। এরা বাংলাদেশের লোক নন ? এরাতো টাকা না নিয়েই অনেক ছাত্র তারা তৈরি করেছেন যারা সমাজের বিভিন্ন জায়গায় আছেন। বিভিন্ন সরকারি দ্বায়িত্বও হয়তো পালন করছেন। তো এদের (শিক্ষক) দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন কেন ?
সাবেকে ছাত্রনেতা বলেন,আমি ওইযে বলেছি, নিশ্চয়ই কিছু গনবিরোধী উপদেষ্টা রয়েছেন; যারা কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ, জনগনের সবচেয়ে আলোকিত অংশ শিক্ষকদেরকে ক্ষুধার্ত রেখে, অনাহারে রেখে, এদের সন্তানদেরকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়িয়ে আপনারা কি আনন্দ পাবেন আমি জানি না। কিছু কিছু উপদেষ্টারা এই কাজগুলো করছেন। তাদের (শিক্ষক) দিকে কোন দৃষ্টি দেওয়াতে দিচ্ছেন না প্রধান উপদেষ্টাকে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি, সরকারের মধ্যে কিচেন কেবিনেট ( সরকারের খুব ঘনিষ্ঠ) আছে। তাদের কারণে ড ইউনুস সাহেব একাই কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তিনি তো প্রধান উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রী সমমর্যাদা। তিনি তো উন্নয়নে কিছু সিদ্ধান্ত একাই নিতে পারেন, কিছু উপদেষ্টা সেটি হতে দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, যারা কিছু কাজ করতে চায়, যারা ভালো কিছু করতে চায় তাদের বিরুদ্ধেই, এই সরকারের বিরুদ্ধেই লেগে যায়। ড. এম আমিনুল ইসলাম একজন মেধাবী শিক্ষক, একজন বড় একাডেমিশিয়ান। আমরা অনেকেই তাকে চিনি। আমরা তাকে চিনি বলেই কী তাকে অপমানিত করা হচ্ছে ? যিনি ম্যাট্রিক, ইন্টারমিডিয়েটে স্ট্যান্ড করেছিলেন। ফিজিক্সের মতো একটি সাবজেক্ট নিয়ে তিনি দেশ বিদেশ থেকে ডিগ্রী অর্জন করেছেন এবং সুনামের সাথে কাজ করেছেন। সকালবেলা তার নাম ঘোষণা করে বিকালে তার নাম বাদ দেয়া হয়। ড. এম আমিনুল ইসলামকে এইভাবে অপমানিত করার দ্বায়িত্ব এই সরকারকে কে দিয়েছে ? এটা কতিপয় উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার কান ভারি করে অথবা নানাভাবে চক্র করে নাম ঘোষণা করার পরও আমিনুল ইসলামকে শিক্ষা উপদেষ্টার মতো জায়গায় না দিয়ে চক্রান্ত করা হয়েছে। আমরা অনেকেই তার ছাত্র। আমরা স্যারকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখি। তার নিষ্ঠা, তার সততা, তার দেশপ্রেম এবং তার কর্মদক্ষতা আমরা ছাত্র হিসেবেই দেখেছি। এরকম একজন গুনী, যোগ্য মানুষ অথচ তার প্রতি যে অপমান করল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ দবিরুল ইসলাম,সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম,অধ্যক্ষ মোঃ মনিমুল হক।